বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ হারলেই বিদায়। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়েই মাঠে নেমেছিল রংপুর রাইডার্স। প্রথমে বল হাতে ঢাকা প্লাটুনকে মাত্র ১৪৫ রানেই আটকে দিয়েছিল মুস্তাফিজুর রহমান-তাসকিন আহমেদ-মোহাম্মদ নবীরা। তবে ব্যাট হাতে মোহাম্মদ নাঈম-শেন ওয়্টাসন-ক্যামরুন ডেলপোর্তরা পারলেন না। বোলারদের দারুণ সাফল্য ম্নান হয়ে গেল ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়।
রংপুর গুটিয়ে গেল লক্ষ্য তাড়া থেকে ৬১ রান দূরে। সেই সঙ্গে নিজেদের নিয়ে গেল সকল সমীকরণের উর্ধ্বে। এবারের আসর এখানেই কার্যত শেষ। অন্যদিকে মাশরাফি মুর্তজার দল পৌঁছে গেল শেষ চারে।
গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ঢাকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান রংপুর অধিনায়ক শেন ওয়াটসন। নিজেদের ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান তোলে ঢাকা। জবাবে ১৫.৩ ওভারে মাত্র ৮৪ রানে অলআউট হয়ে যায় রংপুর।
প্রথমে ব্যাটহাতে ঢাকার দুই ওপেনারকে স্বাচ্ছন্দে খেলতে দেননি মুস্তাফিজ-আরাফাত সানি। দলীয় ২৬ রানের মাথায় গ্রেগরি তুলে নেন এনামুল হককে। একটু এগুতেই নবীর ঘূর্ণিতে মেহেদীর বিদায়। টিকতে পারেননি আরিফুলও। নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুমিনুলও সঙ্গ দিতে পারলেন না তামিমকে। যোগ্য সঙ্গের অভাবে একসময় ধৈর্যচ্যুতি ঘটে তামিমেরও। তিনি ৪০ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান সাঝঘরে। আসিফ আলি-থিসারা পেরেরাতে ভরসা ছিল ঢাকার। তবে ব্যাটহাতে কেউই পারলেন না দলের প্রয়োজনে হাল ধরতে। সংগ্রহ ১২০ পার হবে কিনা? এমন প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে, ছিক তখনই ব্যাটসম্যান বনে যান পাকিস্তানি লেগ স্পিনার শাদাব খান। ১৯ বলে খেলেন ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস। রানের চাকা বাড়াতে চেষ্টা করেছেন মাশরাফিও। প্রথম বলে ছয় মেরে দ্বিতীয় বলেই ফেরেন তিনি। অবশ্য শেস পর্যন্ত দেড়শর কাছাকাছি (১৪৫) একটি মাঝারি সংগ্রহ পেয়ে যায় ঢাকা। মুস্তাফিজ ও তাসকিন ৩টি করে উইকেট পান। নবী নেন ২টি উইকেট।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই বড় দুটি ধাক্কা খায় রংপুর। মেহেদীর পঞ্চম বলে নাঈম ফেরেন তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে। শেষ বলে শেন ওয়াটসনও লেগ বিফোরের শিকার হয়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। এই যে ব্যাকফুটে পড়ল রংপুর, সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। ক্যামেরুন ডেলপোর্ত (২০), আল আমিন (২৩) ও নবী (১২) পেরুতে পেরেছেন কেবল দুই অঙ্ক। বাকিরা ছিলেন আসা-যাওয়ার ব্যস্ততায়। ব্যাটসম্যানদের এই হতশ্রী পারফরমেন্সে সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া করল রংপুর। মেহেদী হাসান সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান। এছাড়া মাশরাফি, ফাহিম ও শাদাবের ঝুলিতে ছিল ২টি করে উইকেট। একটি উইকেট পেয়েছেন মাহমুদ। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত থেকে ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে শাদাব খানের হাতে।
পয়েন্ট টেবিলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চট্টগ্রাম। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ঢাকা। সমান পয়েন্ট নিয়ে তিনে রাজশাহী। চারে থাকা খুলনার পয়েন্ট ১২, পাঁচে থাকা কুমিল্লার পয়েন্ট ১০।
এখন শেষ চারের তিনটি দলই নিশ্চিত। চারের জন্য লড়াই হবে খুলনা ও কুমিল্লার মাঝে। আর আগেই বিদায় নেয়া সিলেটের সঙ্গী হল রংপুর।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ৩৭তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় খুলনা টাইগার্স এবং কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। সে ম্যাচে কুমিল্লাকে ৩৪ রানের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে মুশফিকুর রহিমের খুলনা টাইগার্স। কুমিল্লার হয়ে টর্নেডো ইনিংস খেলেছেন তারকা ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। তবে তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি কুমিল্লার। বাধ সেজেছিল রবি ফ্রাইলিঙ্কের নিখুঁত বোলিং।
খুলনা টাইগার্সের দেওয়া ১৮০ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১০ বল বাকি থাকতেই ১৪৫ রানে গুটিয়ে যায় কুমিল্লা আর তাতেই ৩৪ রানের জয় নিশ্চিত হয় মুশফিকুর রহিমের দলের।