বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ টঙ্গীর তুরাগ নদীর পূর্ব তীরে আজ বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাত আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমা। ইতোমধ্যে ঢাকাসহ দেশের ৬৪ জেলা থেকে বাস-ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চযোগে ও আশপাশের এলাকা থেকে পায়ে হেঁটে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে সমবেত হয়েছেন।
পুরো মাঠের জেলাওয়ারী খিত্তায় তাবলীগ জামাতের মুসল্লিরা গত বুধবার থেকে অবস্থান নিতে শুরু করেন। গতকাল সারাদিনই বিভিন্ন যানবাহন ও পায়ে হেঁটে দলে দলে মুসল্লিদের কাফেলা বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। মুসল্লিদের স্রোত গতকাল রাত পর্যন্ত ইজতেমা মাঠের অভিমুখে অব্যাহত ছিল। লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে আজ দেশের বৃহত্তম জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হবে ইজতেমা ময়দানে।
ইয়াকুব আলী শিকদার (৮৫) নামে এক মুসল্লির গতকাল সকালে ইজতেমা ময়দানে মৃত্যু হয়েছে। তিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার লাখিরপাড় এলাকার মৃত হাসেম আলীর ছেলে। ইজতেমার মুরব্বি হাজি রেজাউল করিম জানান, সকালে সাড়ে ৬টার দিকে ইয়াকুব আলী শিকদার নিজ খিত্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তার লাশ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় ৫ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে। যাতে কোন কুচক্রী মহল ইজতেমা ময়দানে কোন নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যে কোন জঙ্গি কার্যক্রম প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।
গতকাল থেকে ইজতেমা ময়দানের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এবারও বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। ইজতেমাস্থলের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলস প্রাঙ্গণে পুলিশের এক ব্রিফিংয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান।
বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে ২৪ ঘণ্টা ইজতেমায় মুসল্লিদের সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশের প্রায় কয়েক হাজার বিদেশি মুসল্লি ঢাকার কাকরাইল মসজিদ, উত্তরা, টঙ্গী ও আশপাশের এলাকার মসজিদে মসজিদে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্য থেকে প্রায় শতাধিক বিদেশি মুসল্লি ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানের নির্ধারিত তাঁবুতে অবস্থান নিয়েছেন।
বিশ্ব ইজতেমার মাওলানা জুবায়ের অনুসারী মুরব্বি ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান জানান, ময়দানকে মোট ৯২টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এবার দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ৮৭টি খিত্তা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচটি খিত্তা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে দেশের মুসল্লিদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নেবেন। বিদেশি মেহমানদের জন্য বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে নিবাস তৈরি করা হয়েছে। সেখানে তাদের জন্য গরম পানি, রান্নার জন্য গ্যাস, উন্নত টয়লেটসহ নানা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।