বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ঠিক হয়ে গেছে এবারের আসরের প্লে-অফের সব দল।কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সেরা চারে জায়গা করে নিয়েছে খুলনা টাইগার্স। খুলনার সঙ্গে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, ঢাকা প্লাটুন ও রাজশাহী রয়্যালস খেলবে শিরোপা লড়াইয়ের শেষ ধাপে।
এই চার দলেরই অবশ্য একটি করে ম্যাচ হাতে আছে। শনিবার গ্রুপপর্বের শেষদিনের দুটি ম্যাচের পর ঠিক হয়ে যাবে কারা খেলবে কোয়ালিফায়ারে, কারা এলিমিনেটরে। আপাতত ১১ ম্যাচ করে খেলে ১৬ পয়েন্টে শীর্ষে চট্টগ্রাম, ১৪ পয়েন্টে দুইয়ে খুলনা, তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে পিছিয়ে তিনে ঢাকা, আর ১৪ পয়েন্টেই রানরেটে আরও পিছিয়ে চারে আছে রাজশাহী।
শুক্রবার ক্ষীণ হলেও শেষ চারে যাওয়ার স্বপ্নটা বেঁচে ছিল কুমিল্লার। স্কোরবোর্ডে খুলনা টাইগার্স ২১৮ রান তুলতেই শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের কৃত্রিম আলোর নিচে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেল ম্যাচের ফল! আশা নেই দেখে কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরাও খুব প্রয়াস চালালেন না যেন! ৯২ রানে হেরে খুলনাকে প্লে-অফে যেতে দিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নিজেদের বিদায়ঘণ্টা বাজায় ওয়ারিয়র্সরা।
কুমিল্লার সেরা চারে যেতে নিজেদের শেষ ম্যাচে খুলনাকে হারাতে হতোই, সঙ্গে কামনা করতে হতো যেন পরের- অর্থাৎ, নিজেদের শেষ ম্যাচেও জয় বঞ্চিত হন মুশফিকরা। হয়েছে উল্টোটা। মেহেদী মিরাজ ও মুশফিকের ১৬৮ রানের বিশাল এক জুটি ম্যাচের ভাগ্য লিখে দিয়েছে।
মাত্র ২ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত ও ৩৩ রানে রাইলি রুশোকে হারানোর পর জুটি গড়েন মিরাজ-মুশফিক। সেই যে শুরু। বিচ্ছিন্ন হয়েছেন একদম ২০১ রানের পর। তাতে অবশ্য বোলারের কোনো কৃতিত্ব নেই। মিরাজ চোটে পড়ে মাঠ ছাড়ায় খানিকটা স্বস্তি কুমিল্লার বোলারদের।
শান্তর সঙ্গে ওপেনিং করতে নেমেছিলেন মিরাজ। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে থেমেছেন ১৯তম ওভারে এসে। যতক্ষণ ছিলেন, দেখিয়ে গেছেন স্পিনার পরিচয়ে হারাতে যাওয়া নিজের ব্যাটিং প্রতিভা। ৪৫ বল খেলেছেন, করেছেন ৭৪ রান। ৫ চারের সঙ্গে ছক্কার মার ছিল ৩টি। যার প্রতিটিই চোখ জুড়ানো।
সবকিছু ছাপিয়ে যা আলোচনায় থাকবে তা হল চলতি বিপিএলে দ্বিতীয়বারের মতো মুশফিকের সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ!
দেশিদের মধ্যে এবার সবচেয়ে ধারাবাহিক মুশফিকুর রহিম। একাধিকবার ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছেন, রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ছিল ৯৬ রানের একটি ইনিংস। সেই ম্যাচে আউট হয়েছিলেন, কুমিল্লার বিপক্ষে থাকলেন অপরাজিত, ৯৮ রান করে।
১৯তম ওভার থেকেই সেঞ্চুরির আভাস পাচ্ছিলেন মুশি। মিরাজ মাঠ ছাড়ায় সেটা বিলম্বিত হল। পরের ব্যাটসম্যান নাজিবুল্লাহ জাদরান এসে কয়েক বল খরচ করায় সব উত্তেজনা জমা হল খুলনা ইনিংসের শেষ ওভারে গিয়ে।
সৌম্য সরকারের করা শেষ ওভারে প্রথম বলটি নষ্ট করেছিলেন মুশফিক, পরের বলে মারলেন চার। তাতে রান হল ৯৬। এক রান নিয়ে নাজিবুল্লাহকে দিলেন স্ট্রাইক। আফগান ব্যাটসম্যান চতুর্থ বলটি নষ্ট করে পঞ্চম বলে এক রান নিয়ে স্ট্রাইক ফিরিয়ে দিলেন অধিনায়ককে। শেষ বলে সেঞ্চুরি পেতে মুশির দরকার ছিল ৩ রান।
শেষ বলটায় আর চার মারা হয়নি খুলনা অধিনায়কের, নিতে পেরেছেন এক রান। তাতে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৭ বলে ৯৮ রানের ইনিংসটি। দল পেয়েছে ২ উইকেটে ২১৮ রানের বিশাল সংগ্রহ।
জিততে হলে বড় রান করতে হবে, এমন তাড়ায় মোহাম্মদ আমিরের ওভারে তৃতীয় বলেই স্টাম্প হারান কোনো রান না করা সাব্বির রহমান। পরে একে একে ফিরে গেলেন স্টিয়ান ফন জিল, ডেভিড মালান ও সৌম্য সরকার।
যা একটু লড়ে যাচ্ছিলেন উপুল থারাঙ্গা, ৬০ রানের মাথায় তাকে হারিয়ে সব আশা শেষ হয়ে যায় কুমিল্লার। বাকিদের ঠেলা-ধাক্কায় চলা ছোট ছোট কিছু ইনিংসে ৯ উইকেটে ১২৬ রান তুলে আসর থেকে বিদায় নিলো বিপিএলের আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা।