মানিকগঞ্জে ৪ বছর পর পৌর মেয়রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ: চার বছর পর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হলো মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিমের।

২০ জানুয়ারী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বহিষ্কারাদেশ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। ফলে গাজী কামরুল হুদা সেলিম এখন থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সকল কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গাজী কামরুল  হুদা সেলিম ২০০৩ সাল থেকে টানা ২০১৪ সাল পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচনে গাজী কামরুল হুদাকে পরাজিত করে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম। জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্য পদেও  গাজী কামরুল হুদা সেলিমকে রাখা হয়নি। ২০১৫ সালে মানিকগঞ্জ পৌর নির্বাচনে গাজী কামরুল হুদা  মেয়র পদে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে জয় লাভ করেন। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় আওয়ামী লীগের গঠতন্ত্রের ৪৭ (ক) ধারা অনুয়ায়ী কেন তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবেনা এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। ওই নোটিশের জবাব দেন গাজী কামরুল হুদা সেলিম। পরে তাকে জেলা আওয়ামী লীগ নোটিশ দিয়ে জানায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে,  গাজী কামরুল হুদা সেলিম দলের বিরোধী কর্মকান্ডের কথা স্বীকার করে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কোন কার্যলাপ করবে না বলে অঙ্গীকার করেছেন। নোটিশের জবাব আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় পর্যালোচনা হওয়ার পর গাজী কামরুল হুদা সেলিমকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে ক্ষমা করা হয়।

এদিকে গাজী কামরুল হুদা সেলিমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়াতে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে। তাদের প্রত্যাশা আগামী জেলা আওয়ামী লীগের  কাউন্সিলের গাজী কামরুল হুদা সেলিম একজন শক্তিশালি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী  হবেন।

এব্যাপারে জেলা  আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, কে পদ পাবে না, কে পদ পাবেন না সেটা বড় কথা নয় । স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়, সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমসহ আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শ যারা বিশ্বাস করেন তাদের সকলকে নিয়েই আগামীতে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হবে। গাজী কামরুল হুদা সেলিম একজন দক্ষ সাংগঠনিক তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়াতে দলের জন্য ভালো খবর। আগামীতে জেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী হবে।

অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম জানান, গাজী কামরুল হুদা সেলিমকে বহিষ্কার করা হয়েছিল দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে। আবার দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়েছে এটাই সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। এটা আমাদের জন্য সুখবর।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের  সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল হুদা সেলিম বলেন, দুর্দিনে দলের জন্য কাজ করেছি। দলীয় নেতাকর্মীরা আমাকে সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছিলেন। পৌর নির্বাচনে জনগনের চাপে প্রার্থী হয়েছিলাম। এতে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় ঘটে। দলের প্রতি আস্থা রেখে বহিষ্কার হওয়ার পরও কাজ করে গেছি। দলের সিদ্ধান্তে চার বছর পর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যহার হওয়াতে এখন থেকে দলের সকল সাংগঠনিক কাজে অংশ নিতে পারবো। এখন দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করতে কাজ করতে কোন বাধা নেই।

Print Friendly

Related Posts