মতলব উত্তরে ১১ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি

জাকির হোসেন বাদশা, মতলব (চাঁদপুর): চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কালিপুর বাজার ও কালির বাজারে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ১১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাতে ডাকাতি সংঘঠিত হয়।

১০টি স্বর্ণের দোকান ও একটি ফার্মেসী বিকাশের দোকান থেকে সাড়ে ৪৬ ভরি স্বর্ণ, ৯৫২ ভরি রোপা ও ৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা লুটে নেয় ডাকাতদল। এ ঘটনায় প্রশান্ত দেবনাথ নামে দোকানদার আহত হয়েছে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ভোরে (রাত আড়াইটা থেকে ৪টার মধ্যে) এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। কালিপুর বাজারের মুক্তা স্বর্ণ শিল্পালয়, গিরীদারী স্বর্ণ শিল্পালয়, সৌরভ স্বর্ণ শিল্পালয়, দাদা-নাতি স্বর্ণ শিল্পালয়’সহ কালিবাজারের ৬টি স্বর্ণ শিল্পালয় ও মিলন ফার্মেসীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

গিরীদারী স্বর্ণ শিল্পালয়ের স্বত্তাধিকারী প্রশান্ত দেবনাথকে ডাকাতরা মারধর করে আহত করে।

তিনি বলেন, ডাকাত দলের দু’জন পুলিশের পোষাক পরিহিত ছিল। তারা ১৪-১৫জন, প্রত্যেকের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র ছিল। তারা স্থানীয় ভাষায় কথা বলছিল। এর আগে ২০১২ সালে কালির বাজারের ৪টি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি হয়েছিল।

মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহজাহান কামাল বলেন, ডাকাতির ঘটনার পরপরই থানার টহলরত পুলিশ সদস্যরা খবর পায় এবং তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে যাই।

এরপরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত ডিআইজি ( অপারেশন এন্ড ক্রাইম) এম. জাকির হোসেন খান পিপিএম, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান, পিবিআই পুলিশ সুপার মো. ওসমান, চাঁদপুর অঞ্চলের নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার জমশের আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানসহ পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি, নৌ-পুলিশ কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিদর্শন করেন।

বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএম জহিরুল হায়াত।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার) বলেন, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। ১০টি স্বর্ণালংকারের দোকানে ডাকাতি হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে ডাকাতরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে দোকানের তালা কেটে প্রবেশ করে। পুলিশ সম্পূর্ণ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে। কালির বাজারে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত ডিআইজি ( অপারেশন এন্ড ক্রাইম) এম. জাকির হোসেন খান পিপিএম বলেন, এই ডাকাত দল একটি সংঘবদ্ধ দল, তারা পরিকল্পনা মাফিক এ ডাকাতি সংগঠিত করেছে। ঘটনা উৎঘাটনের লক্ষ্যে চাঁদপুর জেলা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও নৌ-পুলিশ মাঠে কাজ করছে। ঘটনা উৎঘাটনের লক্ষ্য কালির বাজারের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করছি খুব শীঘ্রই এ ঘটনার তথ্য উৎঘাটন করতে সক্ষম হব।

ওই ঘটনার বিবরণে পুলিশ তখন জানায়, কালিরবাজারে বুধবার রাত আড়াই টার দিকে স্প্রীডবোট যোগে আন্ত:জেলা ডাকাত দল বাজারের উত্তর পাশ্বের ট্রলার ঘাটে নৌঙ্গর করে। এরপর কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই বাজারের নৈশ্যপ্রহরী নুরুল ইসলামকে হাত-পা, মুখ বেঁধে ফেলে রাখে। একই ভাবে বাজারের নৈশ্যপ্রহরী আইয়ুব আলী ও আব্দুল ওহাবকেও বেঁধে রেখে বাজারের স্বর্ণকার পট্রির জীবন সরকার, কানাই বিশ্বাস, তপন বর্মণ ও সুনীল দাসের স্বর্ণের দোকানের তালা ভেঙ্গে লোহার সিন্দুক ভেঙ্গে ডাকাতি করে।

Print Friendly

Related Posts