পঞ্চগড় সংবাদদাতা: মাটি খনন করে পাথর উত্তোলনের দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর বাজার। পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
রোববার সকালে পুলিশ ও স্থানীয় জনতার মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে বেশ ক’জন আহত হয়েছে। ভাংচুর হয়েছে পুলিশের গাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে ৩ রাউন্ড টিয়ারসেল ও ৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়তে হয়েছে।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে র্যাবসহ অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি।
জানা যায়, শনিবার রাতে স্থানীয় পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকরা ভজনপুর বাজারে টিনের ঢোল পিটিয়ে হরতালের ঘোষণা দেয়। তারা সবাইকে দোকানপাট বন্ধ রেখে রাস্তায় নেমে আসার ডাক দেয়। এতে রোববার সকাল থেকেই হরতাল পালন করছে স্থানীয় জনসাধারণ। খুলতে দেয়া হয়নি দোকানসহ কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ যান চলাচল। মহাসড়কও তাদের দখলে।
উল্লেখ্য, দেশের প্রান্তিক জেলা হিসেবে এ এলাকায় কোন কল কারখানা ও জনসাধারণের কর্মসংস্থান না থাকায় স্বাধীনতার পর থেকেই জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দরিদ্র মানুষেরা নদী থেকে ও ভূমি খনন করে নুড়ি পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করছিল। কিন্তু গত দুই দশক থেকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ড্রেজার মেশিন চললে অল্প কিছুদিনের মধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় এলাকার সাধারণ পাথর শ্রমিক, পরিবেশকর্মী, সুশীল সমাজ ড্রেজারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে। এমনকি এ আন্দোলনে শ্রমিক নিহতের মত ঘটনাও ঘটে। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারি আদেশক্রমে খনিজ সম্পদ রক্ষায় ড্রেজার মেশিন বন্ধসহ ভূমি খনন করে পাথর উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
এদিকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় গত ছয় মাস থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের দাবি, যেভাবেই হোক পাথর উত্তোলন করতে হবে। কিন্তু প্রশাসন অবিচল, কিছুতেই পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে পাথর উত্তোলন করতে দিবেনা।
তেঁতুলিয়া উপজেলা পাথর বালি ব্যবসায়ী ও শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ লিটন বলেন, ‘আমাদের সংগঠন থেকে কোন প্রকার হরতাল কিংবা অবরোধের ডাক দেয়া হয়নি। তবে শ্রমিকরা আমাদের কাছে এসেছিল, তারা আমাদেরকে বলেছে রোববার তারা সড়কে অবস্থান করবেন।’