আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি আল আমিনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা। আল-আমিন ছিলো তাদের পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। তার মৃত্যুতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে নিহতের পরিবারের লোকজনের ভবিষ্যৎ। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা তারা। এছাড়া তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহত আল আমিন (৩২) টাঙ্গাইলের কালিহাতী নাগবাড়ী ইউনিয়নের আউলাতৈল গ্রামের ফরহাদ আলীর ছেলে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে জেদ্দার হাইআল সামির এলাকায় তাদের বহনকারী গাড়িটিকে একটি লরি ধাক্কা দেয়। এতে করে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আল আমিন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে নিহতের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের মা-বা এবং স্ত্রী আহাজারি করছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও শোকাহত। আল আমিন নিহত হওয়ার খবরে পেয়ে তার বাড়িতে এসে ভিড় করেছেন পাড়া-প্রতিবেশীরা।
নিহত আল আমিনের স্ত্রী বিলকিস বেগম জানান, তাদের বিয়ে পাঁচ বছর হলেও তাদের কোন সন্তান হয়নি। দুই ভাই-বোনের মধ্যে আল আমিন ছোট। বাবা মা অসুস্থ থাকায় ছুটি নিয়ে আল আমিনের আগামি ১০ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে আসার কথা ছিলো। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমার স্বামীর লাশ যেন দ্রুত ফেরত দেয়া হয়। শেষবারের মতো যেন দেখতে পারি।
নিহতের পিতা ফরহাদ আলী বলেন, আমি আমার ছেলের লাশ দ্রুত ফেরত চাই। সৌদি আরব থেকে নিজ খরচে বাড়িতে লাশ নিয়ে আসার মতো আমাদের কাছে তেমন অর্থ নেই। তাই সরকারের কাছে আবেদন যে, সরকারি খরচে আমার ছেলের লাশ দ্রুত ফেরত যেনো পাই।
দুর্ঘটনার পর সৌদি রেড ক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ, সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল ডিফেন্সের জরুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নিহতদের উদ্ধার করে কিং আব্দুল আজিজ হাসপাতালে হিমঘরে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল ছালাম বলেন, আল আমিন খুবই ভদ্র এবং শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিলো। তার পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ দেশে আনার সামর্থ নেই। তাই আমরা এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে দ্রুত লাশ দেশে পাঠানোর জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।