মো. রাসেল হোসেন, ধামরাই: ঢাকার ধামরাইয়ে সরকারি হাসপাতালের ভিতর থেকে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়োগ দেওয়া ৬ জন দালাল চক্রের সদস্যকে আটক করেছে ধামরাই থানা পুলিশ।
বুধবার (১২ জানুয়ারী) সকালে ধামরাই সরকারি হাসপাতালের ভিতর থেকে এই ৬ জনকে আটক করা হয়।
জানা যায়, সরকারি হাসপাতালের সন্নিকটে বেম কিছু প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে উঠেছে।যেখানে ১০০ গজের মধ্যে কোন প্রাইভেট হাসপাতাল থাকার কোন বিধান নেই। অথচ হাসপাতাল গেইট সংলগ্ন গড়ে উঠেছে এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার কতৃপক্ষ বেশ কিছু নারী কর্মী নিয়োগ দিয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদেরকে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে আসে। তার বিনিময়ে ওসব কর্মকর্তারা শতকরা হিসেবে একটি ভাগ নিয়ে থাকে।
প্রতিদিনের মতো বুধবারও সেই নারী কর্মকর্তারা ভিড় জমাতে থাকে হাসপাতাল গেইটে।তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে রোগী ভাগানোর সময় হাসপাতাল কতৃপক্ষ দালান চক্রের ৬ সদস্যকে হাতেনাতে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের হাতে সোপর্দ করেন।
আটককৃতরা হলেন- সাভারের ঘুঘুদিয়া এলাকার হাসমত আলীর মেয়ে শিল্পী আক্তার, সাভারের নয়ারহাট এলাকার আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে শিউলি আক্তার, ধামরাইয়ের শ্রীরামপুর এলাকার মোহাম্মদ আলীর মেয়ে মাসুমা, ধামরাইয়ের ইসলামপুর এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে মিনা আক্তার, ধামরাইয়ের কেলিয়া এলাকার রেজাবর ইসলামের মেয়ে নিলা আক্তার,ধামরাইয়ের ইসলামপুরের খোরশেদ আলমের মেয়ে শারমিন আক্তার। এরা প্রতিনিয়ত সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালের ভিতর থেকে রোগী ভাগিয়ে যে যে ক্লিনিকে নিয়োগপ্রাপ্ত সেখানে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য নিয়ে আসে।
দেখা যায়, সরকারি হাসপাতালের সন্নিকটে চয়নিকা হাসপাতাল, আইকন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সন্ধানী ক্লিনিক,আজাহার ক্লিনিক অবস্থিত। এসব নামধারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মালিকরা মাসিক বেতনে ও শতকরা হারে এই দালাল চক্রকে টাকা দিয়ে থাকে। তারা সরকারি হাসপাতাল হতে বিভিন্ন ছলনা করে, কম টাকায় চিকিৎসা দেওয়ার নাম করে রোগী নিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে থাকে।
আটককৃতরা বলেন, প্রাইভেট হাসপাতাল কতৃপক্ষ আমাদের মাসিক বেতনে নিয়োগ দিয়েছে। আমাদের কাজ হলো সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরকারী হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিতে আসে তাদেরকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে আসা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর রিফফাত আরা বলেন, সরকারি হাসপাতালের পাশে বেশ কিছু অবৈধ ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। এই সব ক্লিনিকের মালিকরা এইসব কিছু কর্মী নিয়োগ দিয়ে রোগী ভাগানোর কাজ করে থাকে। সরকারি হাসপাতালে কোন টেষ্ট হয়না। এই বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে তাদের নিয়ে যায়। এদের সাথে প্রাইভেট ক্লিনিকের মালিকরাও জড়িত।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সামিউল হক মানবিক বিষয় মনে করে তারা যেন আর এই কাজের সাথে জড়িত না হয়- সতর্ক করে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে আসামি ৬ জনকে ছেড়ে দেন।