বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ না করেই চলছে রাস্তা প্রশস্ত ও পাকাকরণ

মো. রাসেল হোসেন, ধামরাই : ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে  ধামরাই ঢুলিভিটা-কালিয়াকৈর-মাওনা পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্যে  রাস্তার মাঝখানে একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়ক প্রশস্ত ও পাকা করার কাজ চলছে। রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য রাস্তার  দুই পাশে কয়েক লাখ টাকার কয়েকশ গাছ কাটা হয়েছে। তবে রয়ে গেছে রাস্তার মাঝে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিদ্যুৎ বিভাগের অনুকূলে টাকা জমা দেওয়া হয়নি। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগ খুঁটিও অপসারণ করেনি। এরপরও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সড়কের মাঝখানে খুঁটি রেখেই পাকা করার কাজ করছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে  যানবাহনের চালক ও স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানা গেছে, দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত যানজটের চাপ কমাতে ও যাতায়াতের সুবিধার্থে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা থেকে কালিয়াকৈর-মাওনা পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ৫০ কিলোমিটারের উভয়পাশে প্রশস্তকরণ ও পাকা করার কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
প্রশস্ত ও পাকাকরণের জন্য প্রায় দেড় বছর আগে এ রাস্তাটুকু দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে প্রায় এক বছর আগে। রাস্তা প্রশস্ত করার ফলে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা থেকে শরীফবাগ বাজার পর্যন্ত ১১ হাজার ভোল্টেজ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ  সংযোগের প্রায় ৮০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তার মধ্যে পড়েছে। খুঁটি অপসারণ ও প্রতিস্থাপন করতে সওজকে ৮০ লাখ টাকার ডিমান্ড নোট দিয়েছে ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ধামরাই জোনাল অফিস।
স্থানীয় বাসিন্দা আনিসুর রহমান স্বপন বলেন, রাস্তার মাঝে খুটি রেখে রাস্তা পাকা করার কাজ চলছে। এটা যুক্তিযুক্ত নয়।এতে যে কোন সময়ে খুটির কারণে মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অতি দ্রুত এই খুটিগুলো অপসারণ করা দরকার। সকাল থেকেই হাজারো মানুষ, স্কুল , কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। এতে সমস্যার সৃষ্টি পূর্বেই সমধান করা উচিত।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর অনুকূলে ৮০ লাখ টাকা জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো টাকাই জমা দেয়নি সওজ। ফলে প্রয়োজন ও জরুরি থাকা সত্ত্বেও  খুঁটিগুলো অপসারণ করছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার রাস্তার মধ্যে খুঁটি রেখেই পাকা করার  কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। একদিকে পাকা করার কাজ, অন্যদিকে যানবাহনও চলাচল করছে পাল্লা দিয়ে। এতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে অনাঙ্খিত দুর্ঘটনা। জরুরি ভিত্তিতে খুঁটিগুলো অপসারণ করা না হলে যেকোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালকসহ স্থানীয়রা।
বাসচালক আবদুর রাহিম, শ্রমিক নেতা শামীমসহ অনেকে জানান, রাস্তার মধ্যে থাকা বৈদ্যুতিক খুটি জরুরিভাবে অপসারণ করা না হলে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ধামরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম খালেদ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জোয়ারদার বলেন, খুঁটি অপসারণ ও প্রতিস্থাপনের ব্যয় হিসেবে ৮০ লাখ টাকা  সড়ক ও জনপথ বিভাগ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ঢাকা-৩ এর অনুকূলে জমা দেওয়ার জন্য অনেক আগে থেকেই বলা হয়েছে। কিন্তু সড়ক জনপথ বিভাগ কোনো টাকাই জমা দেয়নি। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও খুঁটিগুলি অপসারণ করতে পারছি না।
মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা প্রাক্কলন ব্যয় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে আসলে টাকা জমা দেওয়া হবে। তবে সময় লাগবে।
এদিকে  একইভাবে সূয়াপুর-সাভার নামাবাজার পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত ও পাকা করার কাছ চলছে। রাস্তাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের। এরাস্তাতেও দেড় শতাধিক খুঁটি রয়েছে। যা রাস্তা থেকে সড়াতে হবে। এ খুঁটি অপসারণ ও প্রতিস্থাপন করতে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ের চাহিদাপত্র দিয়েছে ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কোন টাকা জমা দেয়নি। ফলে রাস্তা থেকে খুঁটিও অপসারণ করা হয়নি বলে জানান  ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ধামরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম খালেদ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জোয়ারদার।
Print Friendly

Related Posts