জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: পরিবেশ দূষনের কারণে রাজধানী ও এর আশেপাশের জেলাগুলোর বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট বিভাগ। এর মধ্যে রাজধানীর পাশের জেলা মানিকগঞ্জেও রয়েছে বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটা। হাতে গোনা দুই একটি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ হলেও বাকীগুলোর কার্যক্রম চলছে দেদারসে।
মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদফতর কার্যালয়ের তথ্যমতে, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় মোট ইটভাটার সংখ্যা ১৫০ টি। এর মধ্যে অবৈধ ইটভাটার তালিকায় রয়েছে ২৭ টি। যার মধ্যে কয়েকটি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বাকীগুলো চলছে। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ইটভাটার কার্যক্রম চালু থাকায় প্রশাসনের দ্বিমুখী উচ্ছেদ অভিযানে নানা ধরণের মন্তব্য করেন ক্ষতিগ্রস্থ ইটভাটা মালিকেরা।
জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দতরা এলাকার তমা ব্রিক্সের মালিক (অর্ধেক অংশের) জাকির হোসেন বলেন, হাইকোর্টে রিট করে দীর্ঘদিন ধরে তারা ইটভাটা চালিয়ে আসছেন। পরে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের ইটভাটায় প্রথমে জরিমানা ও এর মাস খানেক পরে ভাটাটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে দেয় প্রশাসন। তবে একই উপজেলায় আরও তিনটি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম চলছে। কিন্তু কিভাবে ওই সমস্ত ভাটার কার্যক্রম চলছে সে বিষয়ে কোন উত্তর জানা নেই বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে একই উপজেলার কান্দাপাড়া এলাকার ফ্রেন্ডস ব্রিক্সের পরিচালক মো. সোহেল মিয়া জানান, তার ইটভাটার বিষয়ে সাংবাদিকদের কোন বক্তব্য দিবেন না তিনি। ম্যাজিষ্ট্রেট সাথে করে নিয়ে গেলে ভাটার কাগজপত্র দেখাবেন ও বক্তব্য দিবেন।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম জানান, সাটুরিয়া উপজেলায় ৫টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ইটভাটায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। বাকী তিনটি অবৈধ ইটভাটায় জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার পর ওই ভাটাগুলো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন ওই ভাটাগুলোতেও ফের উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
জেলার হরিরামপুর উপজেলার অবৈধ একটি ইটভাটার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ম্যাজিষ্ট্রেট একবার এসে জরিমানা করে গেছে। একদিন ভাটা বন্ধ ছিল। পরের দিনে চালু করেছি। সাংবাদিকরা রির্পোট না করলে ম্যাজিষ্ট্রেট আর আসবে না। আর আপনারা যদি রিপোর্ট করেন তাহলে ম্যাজিষ্ট্রেট এসে ভাটা বন্ধ করে দিবে। তাই অবৈধ ইটভাটা নিয়ে কোন ধরণের রিপোর্ট না করার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. খালেদ হাসান জানান, তাদের নিজেদের ম্যাজিষ্ট্রেসি কোন শক্তি নেই। ইচ্ছে করলেই তারা অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালাতে পারেন না। এর জন্য তাদেরকে জেলা প্রশাসন বা উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তার উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। যে কারণে ইচ্ছে থাকা সত্বেও তাদের কার্যক্রম কাগজ পত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে বলে জানান তিনি।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস.এম ফেরদৌস জানান, মানিকগঞ্জে অবৈধ বেশ কিছু ইটভাটা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকীগুলোরও কার্যক্রমও পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে।