নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য ভয়াবহ দিন

দিনটি ছিল ১৫ মার্চ ২০১৯। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৪৯ মুসল্লিকে হত্যা করেন ব্রেনটন ট্যারেন্ট নামে অস্ট্রেলিয়ার শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী। নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ঐ সময় মসজিদে গিয়েছিল এবং ঠিক যখন হামলার ঘটনাটি ঘটে তারা মসজিদের ভেতর প্রবেশ করতে যাচ্ছিল। হামলার সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা ঐ মসজিদের দিকেই যাচ্ছিলেন তখন তাদেরকে সতর্ক করা হয় এবং তারা পাশের একটি পার্কে ঢুকে পড়েন।

ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা সময় ঘটনাস্থলেরর ৫০ গজের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের একটি দল, সেখান থেকে ফিরে সংবাদমাধ্যমে ঘটনার ভয়াবহতা বোঝাতে এভাবে বলছিলেন নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট।

এটা সামনে থেকে দেখা কঠিন, রক্তাক্ত অবস্থায় মানুষ বেড়িয়ে আসছিল, বাসের মধ্যে সবাই অনেকে কান্না করছিল, কে কী করবে, কীভাবে রক্ষা পাবে। খালেদ মাসুদ পাইলটের কথায় আরও উঠে আসে ঘটনার বিবরণ।

সবাই দেখেছে র্ঘটনাটি, এটা আমরা কখনোই চাই না, আমরা খুবই ভাগ্যবান। আমরা ১৭ জন ছিলাম, আমরা খুবই কাছে ছিলাম, ৫০ গজের মতো দূরে ছিলাম। আর তিন-চার মিনিট আগে মসজিদে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতো।

সিনেমায় দেখলে যেমন হয়, মানুষজন রক্তাক্ত অবস্থায় বেরিয়ে আসছিলো। গুলি যখন শুরু হয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তখন বাইরেই ছিলেন। মসজিদের ভেতরে না ঢুকলেও গুলির ভয় ছিলো তখনও, বলছিলেন পাইলট।

আমরা বাসের মধ্যে মাথা নিচু করে ছিলাম। আরেকটা ভয় ছিল যিনি আক্রমণ করছেন তিনি যদি বের হয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তেন, সেই ভয় সবাই পাচ্ছিল।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান ঢাকায় নিজের বাসায় তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা যেটা জেনেছি, একদম কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল টিম বাস, সেখানে সামনে একটা গাড়ি থেকে বের হয়ে জানান ওদিকে যেও না। ওখানেই সবাই বেঁচে যায়।

বাস থেকে নেমে পার্কের ভেতর দিয়ে নিরাপদে ফিরেন তামিম, তাইজুল, মিরাজ ও সৌম্য। হোটেলে ফেরার পর মুশফিক কাদঁছিলেন।

নাজমুল হাসান জানান, দল তিনটা গ্রুপে ভাগ হয়ে গিয়েছিল, একটা গ্রুপ চলে গিয়েছিল দুপুরের খাবার খেতে, একটা গ্রুপ মাঠেই ছিল, আর একটা গ্রুপ নামাজের জন্য মসজিদে যাচ্ছিলো। মসজিদে যাওয়া গ্রুপের সাথে কেউই ছিল না, বাকিরা সবাই ছিল মাঠে,” মসজিদে যাওয়া ক্রিকেটারদের সঙ্গে যে কোন নিরাপত্তা দল ছিল না।

এ ঘটনায় ১৬ই মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট বাতিল করা হয়।

শাহ মতিন টিপু

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts