জুবায়ের চৌধুরী পার্থ, ভোলা: ভোলায় যেখানে সবাই মরণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। সেখানে এখনও ঠিকানাবিহীন বহু মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ পথেই রয়েছে, যারা বোঝেনা করোনাভাইরাস কী।
করোনাসংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ভোলার ব্যস্ততম সড়ক পাড়া মহল্লায় নেই আর আগের মতো লোকসমাগম। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক দোকান পাট । কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের নেই মৃত্যুর ভয়। বরং এই মহাবিপদের সময় তাদের এখন খাদ্যাভাবে জীবন সংকটময় হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয় নিরাপত্তাহীন ওইসব মানুষগুলোর কাছ থেকেও করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশংকা রয়েছে।
ভোলা শহর ও এর আশপাশ ঘুরে জানা গেছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত ২৬শে মার্চ থেকেই ভোলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সর্তকতা জারি করা হয়। ঔষধ, মুদি ও কাঁচাবাজার ছাড়া সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে করোনাভাইরাস ঝুঁকি এড়াতে জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে নৌবাহিনী টহল শুরু করে। সাধারণ মানুষও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয় না। বলতে গেলে ভোলা শহর প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ঘরে। কিন্তু কিছু মানসিক ভারসাম্যহীন অসহায় মানুষ শহরের রাস্তার ধারে পড়ে আছে। তারা কথা বলতে পারেনা। কোন কিছু বোঝেও না। করোনাভাইরাস নিয়ে তাদের চিন্তাও নেই। কিন্তু অপরিস্কার নোংরা অবস্থায় পড়ে থাকায় এসব ভারসাম্যহীন মানুষদের মধ্যে করোনা ছড়ানোর আশংকা দেখা দিয়েছে। এমনকি তাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে অন্যদের মাঝেও। কিন্তু এসব ভারসাম্যহীন মানুষগুলোকে দেখার নেই কেউ।
সাদ্দাম হোসেন নামে এক পথচারী বলেন, আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তারা মাস্ক পরি। কিন্তু অসহায় এসব মানসিক ভারসাম্যহীন লোকগুলো তো কিছু বোঝেই না উল্টো খাবারের জন্য মানুষের অপেক্ষায় থাকে।
আরেক পথচারী মামুনুর রশিদ বলেন, হোটেল রেস্তোঁরা যখন খোলা ছিলো পথচারীদের কারো কারো সহায়তার এতদিন তাদের আহারের ব্যবস্থা হতো। কিন্তু এখন আর তাদের দেখারও কেউ নেই। বলতে গেলে অনাহারেই তাদের দিন কাটছে। অনেকেই ফলমূল কিনে দিলেও তাদের কপালে ভাত জুটছে না।
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুম আলম সিদ্দিক বলেন, ভোলা পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে আলাপ করে এসব প্রতিবন্ধী অসহায় মানুষদের একটি পুণর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে খাদ্যসামগ্রীসহ অন্যান্য সেবা নিশ্চিত করা হবে।
এদিকে, ভোলার মানসিক ভারসাম্যহীন ঠিকানাবিহীন এসব মানুষের কোন পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার রাস্তাঘাটে অন্তত শতাধিক মানুষ চরম করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে। অসহায় এসব মানুষের খাবারের ব্যবস্থাসহ করোনা ঝুঁকি থেকে রক্ষার দাবি করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।