সেবায় নিয়োজিত বিডিএফআই তরুণরা এখনও মাঠে

রিপন শান: করোনাভাইরাস এর সংক্রমণে ইউরোপ আমেরিকাসহ গোটা বিশ্ব অসহায় । প্রতিদিন অগনিত মানুষের দেহে সংক্রিমত হচ্ছে ভাইরাসটি। মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। দিনদিন বাংলাদেশেও বাড়ছে আক্রান্তের সারি।
আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্ত জরুরি সেবায় নিয়োজিতরা এখনও মাঠে।  একদিকে যখন সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে,  যখন আতঙ্কিত দেশের আপামর মানুষ, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবক  আত্মনিয়োগ করেছেন মানবতার কল্যাণে।
ভোলা ডেভেপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশাল (বিডিএফআই) এর নেতৃত্বে পুরো ভোলা জেলায় সংগঠনটির উদ্যমী স্বেচ্ছাসেবকরা নিরলসভাবে করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করে যাচ্ছেন মানুষ,সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও প্রতিনিয়ত ভয়কে জয় করে মানবসেবার কাজ করছেন তারা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতাল, মসজিদ, সরকারি স্থাপনা, বাড়ি ঘর, রাস্তা ঘাট, দোকান পাট, যানবাহন, হাটবাজারে ভোলা ডেভেপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশাল (বিডিএফআই) এর স্বেচ্ছাসেবক টিম জীবাণুনাশক এন্টিসেপ্টিক ঔষধ স্প্রে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
৪ এপ্রিল থেকে এ কার্যক্রম শুরু করে অদ্যপর্যন্ত চলমান রয়েছে । এবিষয়ে বিডিএফআই এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বলেন, করোনা আতঙ্কে যখন ভোলার প্রতিটি মানুষ আতঙ্কিত ঠিক ঐ সময় ভোলার মানুষের পাশে সেবার মানুষিকতা নিয়ে এগিয়ে আসে ভোলার দুইটি প্রতিষ্ঠান বিডিএফআই ও বিবিএস ক্যাবলস। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যত দিন থাকবে আমরা ভোলার জনসাধারনের পাশে থেকে ততদিনই সেবা দিয়ে যাব।
bfdi-2
তিনি আরো বলেন, ভোলার সকল উপজেলা, হাসপাতাল, ক্লিনিক, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, বাস, লঞ্চ স্টেশন, লোকসমাগম বেশি এমন স্থান, হাট-বাজার, বিভিন্ন মিডিয়া হাউসসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জীবাণুমক্ত করার এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জীবাণুনাশক স্প্রে কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকরা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই এতে অংশ নিচ্ছে ।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তৃনমূল পর্যায়ে সচেতনতা তৈরীর লক্ষে বিডিএফআই ভোলা জেলার ৭টি উপজেলার প্রায় ৫০টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সচেতনতায় মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভোলায় ২২২ জনের ২১টি স্বেচ্ছাসেব টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতি টিমে ১১ জন সদস্য স্প্রে মেশিন, মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই পরে সুরক্ষিত হয়ে জেলার প্রতিটি হাট-বাজার, হাসপাতালসহ নোংরা স্থান খুজে বের করে জীবানুনাশক ঔষধ স্প্রে করছে।
উল্লেখ্য, বিডিএফআই ৪ এপ্রিল ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালীর কাছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের ব্যবহারের জন্য বেশকিছু স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম হস্তান্তর করে। বিবিএস ক্যাবলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ভোলার কৃতি সন্তান ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদারের সহযোগিতায় সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে সার্জিক্যাল মাস্ক ১৫শ, সার্জিক্যাল ক্যাপ ১৫শ, গ্লাভস ৭ হাজার, সু-কভার ১শ, পিপিই ৪০টি, জিবানুনাশক স্প্রে মেশিন ১৫টি এবং জীবানুনাশক ঔষধ ৪০ ব্যাগ।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, বিডিএফআই’ -এর সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল মজিদ, সহ-সভাপতি মো: মাহফুজুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আ. হ. ম. ফয়সল প্রমূখ।
Print Friendly

Related Posts