জ.ই. বুলবুল: করোনাভাইরাসের মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে বরেণ্য ইসলামী আলোচক আল্লামা মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। আজ শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদরাসা প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
তবে জানাজা মাদরাসা মাঠ ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে যায়। একদিকে বিশ্বরোড মোড় হয়ে সরাইলের মোড় পর্যন্ত, অন্যদিকে আশুগঞ্জের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকে লোকজন। এ ছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত পুলিশ ছিল এক প্রকার নীরব দর্শক।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু বলেন, ‘আমরা চিন্তাও করতে পারিনি যে এত লোক হবে। কত লোক হয়েছিল-তার তো সঠিক হিসাব নেই। তবে অনেকেই ধারণা করছেন লাখের মত মানুষ হবে।’
ওসি বলেন, ‘আমরা গতকালই ওই মাদরাসায় গিয়ে বলে এসেছিলাম, জানাজায় যেন বেশি লোকের সমাগম না করা হয়। তারা বলেছিল ৫০-৬০ জন, যারা মাদরাসায় আছেন শুধু তারাই অংশ নেবেন হুজুরের জানাজায়। বাইরের কাউকে ডাকা হয়নি। কিন্তু সকাল ১০টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকে হঠাৎ হাজার হাজার মানুষ জমা হতে শুরু করে। আমরা দুই থানার কিছু পুলিশ সেখানে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমাদের কিছুই করার ছিল না। যদি আগে থেকে একটু আঁচ করা যেত, তাহলে অবশ্যই অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’
‘জানাজা শেষ করেই সকল মানুষ ওই স্থান ত্যাগ করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও আশেপাশের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার এমনকি ঢাকা থেকেও লোকজন এসেছিল। এই লকডাউন অবস্থার মধ্যে কীভাবে এত মানুষ অন্য জেলা থেকে এলো-সেটাও ভাবার বিষয়’ যোগ করেন শাহাদাৎ হোসেন টিটু।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেন, ‘এটা থেকে বুঝা যায় যে আমাদের মাঝে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ দিয়ে এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মোটেও সম্ভব নয়।’
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাস পাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন যুবায়ের আহমেদ আনসারী (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
যুবায়ের আহমেদ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির এবং বেড়তলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। এ ছাড়া তিনি একাধিক মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ইসলামী আলোচক হিসেবে তার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে।