ইফতেখার শাহীন: করোনা ভাইরাসের কারনে সারা দেশের গনপরিবহন বন্ধ থাকায় বরগুনা সদর উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের তরমুজ চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। ফলে, পরিপক্ক তরমুজ ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বলে জানান একাধিক কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের মৌসূমে বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নসহ নলটোনা, বরগুনা সদর ও কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নে মোট ৭’শ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়।
কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্নিঝড় বুলবুলের আঘাতে আমন ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা সামান্য পূঁজি নিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে এ মৌসূমে তরমুজের চাষ করে। কিন্তু বিধি বাম, তরমুজের আশানুরূপ ফলন হলেও পরিবহনের অভাবে তরমুজ চালান করতে পারছেননা কৃষক। কৃষিপন্যবাহী পরিবহন সরকারী নিষেধাজ্ঞার আওতামূক্ত হলেও চলমান প্রেক্ষাপটে ভয়ে পরিবহন নিয়ে রাস্তায় নামতে দিচ্ছেননা পরিবহন মালিকরা। ফলে পরিবহন অভাবে পাইকার আসছেনা তরমুজ ক্রয় করতে। তাই ক্ষেতের তরমুজ ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের বানাই গ্রামের কৃষক আবদুল হালিম বলেন, আমার যে পূঁজি ছিলো তার সাথে একটি বে-সরকারী সংস্থা থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋন গ্রহন করে ১ একর ৮০ শতাংশ জমিতে তরমুজের আবাদ করি। এ বছর ফলন ভালো হলেও করোনার প্রভাবে পরিবহন না পাওয়ায় পাইকার আসছেনা, তাই পরিপক্ক তরমুজ সঠিক সময়ে যদি চালান করতে না পারি তাহলে ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই নষ্ট হবে। আমার এই শেষ সম্বলটুকু যদি হারাতে হয় তাহলে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
এসময় জরুরী ভিত্তিতে সরকারীভাবে এই পচনশীল পন্য পরিবহনের উদ্দ্যোগ গ্রহন না করলে কয়েক’শ কৃষক নিঃস্ব হয়ে যাবে বলে জানান, বালিয়াতলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এমএ বারী বাদল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এবারে তরমুজের ফলন খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু, পন্যবাহী পরিবহন সরকারী নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত হলেও ট্রাক শ্রমিকরা ভয়ে ট্রাক নিয়ে রাস্তায় নামছেন না। তবে, পাইকার ট্রাকের ব্যবস্থা করতে পারলে কৃষি অফিস থেকে প্রত্যয়ন দেয়া হবে, যাতে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক তার পন্য চালান করতে পারেন।