আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এর ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে সোমবার যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও জেলার বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন ও ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। এর ফলে অনেকেই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
জেলায় ৬টি উপজেলায় ১ লাখ ২৯ হাজার ১২১ জন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও ৩ হাজার ৬৮৬ হেক্টর ফসলী জমি নিমজ্জিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় এখন পর্যন্ত টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী এবং গোপালপুর উপজেলার ২৪ টি ইউনিয়নের অন্তত ১৩৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
অপরদিকে, কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভা আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে ১ লাখ ২৯ হাজার ১২১ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে ৫৭২টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং আংশিক ১০৬৫টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলিন হয়েছে। এছাড়াও নাগরপুরে ১ টি স্কুল নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই ৬ উপজেলার ১৬২ বর্গ কিলোমিটার প্লাবিত হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, জেলায় এখন পর্যন্ত ৫০ কি.মি. আংশিক কাঁচা রাস্তা এবং ৭ কি.মি. আংশিক পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৩টি আংশিক ব্রিজ কালভাট ক্ষতি হয়েছে।অন্য দিকে ২.৫ কি.মি. আংশিক নদীর বাঁধ ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া জেলায় ২০০ মে.ট্রন জির চাল, নগদ ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া ২ হাজার শুকনা প্যাকেটও বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
অপরদিকে শিশু খাদ্য ২ লাখ টাকা এবং গোখাদ্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।যা ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে দেয়া প্রক্রিয়াধীন। সূত্র আরো জানায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সেগুলো হলো- মাহমুদনগর, কাতুলী, কাকুয়া, হুগরা এবং ছিলিমপুর। ভূঞাপুর উপজেলার প্লাবিত ৪ টি ইউনিয়ন হলো- অর্জুনা গাবসারা, গোবিন্দাসী এবং নিকরাইল।
কালিহাতী উপজেলার ৪ টি ইউনিয়ন হলো- দূর্গাপুর, গোহালিয়াবাড়ি, দশকিয়া এবং সল্লা। গোপালপুর উপজেলার ৩ টি ইউনিয়ন হলো- হেমনগর, ঝাওয়াইল এবং হাদিয়া। নাগরপুর উপজেলায় ৫টি ইউনিয়ন হলো- সলিমাবাদ, ভাররা, ধুবুরিয়া, দপ্তিয়র এবং পাকুটিয়া। দেলদুয়ার উপজেলার ৩ টি ইউনিয়ন হলো আটিয়া, দেওলি, লাউহাটি।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো যমুনা, ধলেশ্বরী এবং ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।