আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: প্রতিবন্ধী হয়েও জীবন সংগ্রামে থেমে নেই টাঙ্গাইলের বাসাইল কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের জিকাতলী পাড়া গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী নয়ন (৩২)। নয়ন প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেও তার উপর ভরসা না করে চা বিক্রি করেন।২০১০ সাল থেকে চা বিক্রেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন।
চা বিক্রেতা হিসেবে নয়ন একজন সুপরিচিত মুখ। বাকপ্রতিবন্ধী হয়েও থেমে নেই তার কর্মজীবন।সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী সে। কাজের মাঝেই তার পরম আনন্দ।
বাক প্রতিবন্ধী সাজেদুল ইসলাম নয়ন। ভাগ্যের নির্মমপরিহাসে বাক প্রতিবন্ধী হিসেবেই তার জম্ম।সে মনের ভাবটুকু দশজনের মত প্রকাশ করতে পারেনা। এরপরও নিজেকে খাট করে দেখেনা। দুই ভাই বোনের মধ্যে নয়ন ছোট।নয়ন স্পষ্টভাবে কথা বলতে না পারলেও ইশারায় ইঙ্গিতে কথা বলে।
সে বাকহীন হলেও তার কোন দুঃখ নেই বলতে থাকে সবই আল্লাহর ইচ্ছা।নয়নের বাবা লাল মাহমুদ কৃষি কাজ করেন আর মা গৃহিনী । তার ছোট সংসারে এক ছেলে এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মেয়ে তানজিনা আক্তার তুন্নি (৬) রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে আর ছেলে তায়েম আলী (৩) বছর। বর্তমানে সে চা বিক্রেতা হিসেবে নিজেকে একজন কর্মমুখী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
নয়ন নিজ এলাকায় ভাল একজন চা বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত। তার চা খেতে দূর-দূরন্ত থেকে লোক আসে। এলাকায় তার রয়েছে ব্যাপক সুনাম। সবার কাছে খুবই আদরের নয়ন। সে টাঙ্গাইলের বাসাইল সদর ইউনিয়নের রাশড়া করিম বাজারে চায়ের দোকান করে।
রাশড়া করিম বাজারের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, নয়নের দোকানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে চা খেতে। সবাই নয়নের প্রশংসা করে। আমরাও নয়নকে আদর করি। সে বাক প্রতিবন্ধী হয়েও নিজের সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে।
বাসাইল মনি ক্লিনিকের পরিচালক মো: সাইদুল ইসলাম দিপু বলেন, নয়নের হাতের বানানো চা খেতে বাসাইল থেকে রাশড়া করিম বাজারে প্রায় আসি। বাকপ্রতিবন্ধী হয়েও যে কারোও কাছে হাত না পেতেও নিজে ভালো মতো চলা যায় নয়ন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই তার হাতের বানানো চা খেতে আসে।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন-অর- রশীদ খান বলেন,প্রতিবন্ধী হয়েও যে নিজের কর্ম-দক্ষতায় নিজের পুরো সংসারের খরচ বহন করছে চায়ের দোকান করে। এটা সমাজের জন্য গৌরবের। নয়নকে দেখে আরো অনেক মানুষ আছে স্বাবলম্বী হতে পারে। শারীরিক বা বাকপ্রতিবন্ধী যাদের দোকান আছে তাদের যদি আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। তাহলে তাদের দোকানগুলো উন্নত করতে পারবে। শারীরিক বা বাক প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের আওতায় আনলে এবং দোকান করার জন্য আর্থিক সহায়তা দিলে দোকান করে নিজেদের সংসারের খরচ বহন করতে পারবে।