খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল : আর মাত্র এক সপ্তাহ পরে আসবে চৈত্র। ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রা। এসময় বরিশালে বিভিন্ন শরবত ও কোমল পানীয়র পাশাপাশি চাহিদা বেড়েছে ডাবের।
নগরীর বিভিন্ন সড়কের পাশে কিছুদূর পর পরই দেখা যায় ভ্যানে ডাব বিক্রির ভাসমান দোকান। অন্যান্য পানীয়র তুলনায় ডাবের পানি শতভাগ নিরাপদ। দাম একটু বেশি হওয়ায় নিম্নবিত্ত তৃষ্ণার্ত মানুষ ডাবের পানির পরিবর্তে হাট-বাজারে বিক্রি হওয়া বেলের শরবত, আখের গুড়ের শরবত পান করছেন।
গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডাবের চহিদা ও দাম। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ডাব কিনে তা ফেরি করে বিক্রির টাকায় সংসার চলছে অনেকের। গ্রামের কৃষকরা সাধারণত গাছের ডাব বিক্রি করতে বাজারে আসেন না। তাই পাইকারদের বাড়ি গিয়ে চড়াদামে ডাব কিনতে হচ্ছে।
বরিশাল নগরীর নাসির উদ্দিন, ইউনুস ও মোতালেবসহ বেশ কয়েকজন ডাব বিক্রেতা জানান, তারা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রতিটি ডাব গড়ে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা করে কিনেন। বেশি পরিমাণে ডাব কিনতে পারলে তারা বরিশালের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ করেন। আর কমসংখ্যক ডাব কিনলে নগরীর বিভিন্ন এলাকাতেই ভ্যানে ভরে ফেরি করে বিক্রি করেন তারা।
তারা আরো জানান, আকার ও জাত ভেদে ১০০ ডাব এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা করে কিনতে হয়। আর প্রতিটি ডাব খুচরা হিসেবে বিক্রি করেন ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা করে। এতে সারাদিনে গড়ে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা লাভ হয়। এ টাকাতেই ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা ও সংসার খরচ চলে।
শনিবার (৬ মার্চ) নগরীর হাতেম আলি চৌমাথা এলাকায় ডাব কিনতে আসা ডাব ক্রেতা ইমাম হোসেন ও সাইদুর রহমান জানান, পৃথিবীতে প্রায় সব জিনিসে ভেজাল মিশ্রিত হচ্ছে। এমনকি কিছুদিন আগে মিনারেল ওয়াটারসহ পানি বিশুদ্ধকরণ কোম্পানিতে ও বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালিয়ে ময়লা পানি দিয়ে বাজারজাত করার জন্য জরিমানা করা হয়। এ দেখে বাজারের বোতলজাত পানির প্রতিও আস্থা হারিয়ে গেছে। কিন্তু ডাবের পানিতে কোনো প্রকার ভেজাল মেশানো সম্ভব না। তাই ডাবের দাম একটু বেশি হলেও নিরাপদ ও অতি উপকারী এ পানি হাতের নাগালে পাওয়ায় আমরা খুশি।
তারা বলেন, দেশের সব বাজারে স্থায়ীভাবে ডাব বিক্রির দোকান থাকলেও বিশেষ প্রয়োজনে জনসাধারণ বা ক্রেতারা যেকোনো সময় খুব সহজে ডাব কিনতে পারতেন। পাশাপাশি ডাব গাছের মালিকরাও প্রয়োজনে ডাব বিক্রি করতে পারতেন। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই লাভবান হতেন।