সাঁতরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন পাড়ি দিলেন দুই গণপূর্ত প্রকৌশলী

জ.ই বু্লবুল: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘ বাংলা চ্যানেল’ খ্যাত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথ সাঁতরে পাড়ি দিয়েছেন গণপূর্ত অধিপ্তরের দুই প্রকৌশলী।তারা হলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাশ একটানা ৫ ঘণ্টা ২৪ মিনিট ও  উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অর্ণব বিশ্বাস একটানা  ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সাঁতরে ১৬.১ কিলোমিটার পাড়ি দেয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। ২৯ মার্চ সকাল ১০টার দিকে শাহ্ পরীর দ্বীপ থেকে সাঁতার (সিঙ্গেল ক্রস) শুরু করেন তারা।  সাঁতারের আয়োজক হচ্চে ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলা।
ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী এবং রেকর্ডসংখ্যক ১৭ বার (এককভাবে সর্বোচ্চ পাড়ি দেওয়া সফল সাঁতারু) সাঁতারু লিপটন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শাহ্ পরীর দ্বীপ থেকে (সিঙ্গেল ক্রস) সাঁতার শুরু করে সেন্টমার্টিন যান চারজন সাঁতারু। তারা হলেন— পবিত্র কুমার দাশ, অর্ণব বিশ্বাস, দিপঙ্কর বিশ্বাস ও লিপটন সরকার। এরমধ্যে পবিত্র কুমার দাশ, অর্ণব বিশ্বাস ও লিপটন সরকার সফলভাবে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন।
লিপটন সরকার বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমরা কয়েকজন সাঁতারু এই বিশেষ আয়োজনে অংশ নিয়েছি।’
পবিত্র কুমার দাশ ১৯৯৮ সালে এসএসসি এবং ২০০০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিএসসি  করেন। তিনি ৩০ তম বিসিএস এর সদস্য।
অর্ণব বিশ্বাস যশোর জিলা স্কুল থেকে ২০০৩ সালে এসএসসি, যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে ২০০৫ সালে এইসএসসি পাশ করেন। পরে বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিজে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি তিনি আইবিএ থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন।
বর্তমানে বেশ কয়েকটি হাফ ম্যারাথন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন পবিত্র ও অর্ণব।
২০১৮ সাল থেকে তারা সুস্বাস্থ্যের জন্য শারীরিক ফিটনেস এর কার্যক্রম শুরু করেন। পবিত্র কুমার দাশ বলেন, “এই বছরে বাংলাদেশের প্রথম আয়রন ম্যান আরাফাত এর সাথে রমনা পার্কে পরিচয় হয়, আয়রনম্যান আরাফাত ই আমার জীবনের একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে শরীরচর্চা করা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এন্ডুরেন্স ট্রেনিং থেকে শুরু করে লং ডিস্টেন্স রান এর হাতে খড়ি তার হাত ধরেই। এরপর পর্যায়ক্রমে বেশ কয়েকটি হাফ ম্যারাথন সফলভাবে সম্পন্ন করার কৃতিত্ব তারই।”
অর্ণব বিশ্বাস বলেন যে,” ২০২০সালে আয়োজিত বাংলা চ্যানেলের খবর আমাকে বেশ আলোড়িত করে এবং এ ব্যাপারে আমি খোঁজ নেয়া শুরু করি।আয়রন ম্যান আরাফাতকে বিষয়টি জানালে  আমাদের সুইমিং কোচ সাইফুল ইসলাম রাসেল এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। সেই থেকে জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকে আমাদের  সুইমিং ট্রেনিং শুরু হয়।  প্রচন্ড শীতের মধ্যে আমাদের ট্রেনিং চলতে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলের পুকুরে। রাসেল ভাই এইবার প্রথম বাংলাদেশী হিসাবে বাংলা চ্যানেল এর ডবল ক্রস করেছেন। “
সামনের বছরে দুই জনেরই ইন্টারন্যাশনাল ম্যারাথন এ অংশ গ্রহণের ইচ্ছা আছে বলে জানান । এছাড়া সবথেকে বড় ওপেন ওয়াটার সুইমিং কম্পিটিশন “ওশান ম্যান” এ অংশ নিবেন  তারা। তাদের এ সফলতায় সাতাঁরোতে নতুন মাএা যোগ হলো। প্রকৌশলী পাড়ায় তাদের নিয়ে ইতিমধ্যে গৌরবের ঝড় বইছে।
Print Friendly, PDF & Email

Related Posts