শাহ মতিন টিপু
‘পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহভরা কোলে তব মা গো’ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের এমন গানে কার হৃদয় না দুলে ওঠে। মাকে নিয়ে বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে আছে অনেক গান, কবিতা, গল্প ও কাহিনী।
মা হচ্ছেন একজন নারী, যিনি গর্ভধারণ, সন্তানের জন্ম তথা সন্তানকে বড় করে তোলেন। তিনিই সন্তানের প্রথম অভিভাবক ও আপনজন। সন্তানের পরম আশ্রয়। সন্তানের কাছে তার প্রতিটি দিনই মায়ের। তাইতো আবেগ ভালবাসা দুঃখ ও কষ্টে সবসময়েই সন্তানের মুখে অস্ফুট ‘মা’ শব্দটি সবার আগে বেরিয়ে আসে।
আজ বিশ্ব মা দিবস। বিশ্বজুড়ে চালু হওয়া হাজারো দিবসের ভিড়ে ‘মা’ দিবসটিও পালিত হয়ে আসছে। ১৯১৪ সালের ৮ মে থেকে প্রতি মে মাসের দ্বিতীয় রোববার আন্তর্জাতিকভাবে মা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। সবার জীবনের একমাত্র ভরসার জায়গা হলো মা। তারপরও মায়ের সম্মানে একটি বিশেষ দিন এই মা দিবস।
অবশ্য তারও আগে ১৯০৭ সালের ১২ মে প্রথমবার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে ‘মাদার্স ডে’ পালিত হয়েছিল। অ্যানা জার্ভিস নামের এক মার্কিন নারী তার মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিসের মৃত্যুদিনটি একটু অন্যভাবে পালন করার কথা ভেবেছিলেন। অ্যান সমাজকর্মী ছিলেন। তিনি নারীদের জন্য কাজ শুরু করেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কাজ করতেন তিনি।
একদিন ছোট মেয়েটির সামনেই ধর্মপ্রাণ অ্যান হাত জোড় করে বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, প্রার্থনা করি, একদিন কেউ না কেউ, কোনো মায়েদের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তারা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটা তাদের অধিকার’। মায়ের প্রতিটি শব্দ মনে রেখেছিলেন অ্যানা। আর সেই কারণেই অ্যানের মৃত্যুর দিনটিকে (১২ মে, ১৯০৭) সারাবিশ্বের প্রতিটি মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তিনি।
তারপর ১৯১৪ সালে মার্কিন কংগ্রেস ‘মা’ দিবসটি ৮ মে থেকে (মে’র দ্বিতীয় রোববার) পালন করা শুরু করে। আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
এবারও করোনার দিবসটিতে কোনো আনুষ্ঠানিকতা দেখা যাবে না। তাই বলে ঘরে ঘরে মায়ের ভালোবাসা কুড়াতে কার্পণ্য করবে না সুসন্তান।