খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল ॥ ‘ভাই এইডা অমানুষের দুনিয়া। যহন পোলা দুইডার সামনে দিয়া আমারে পিটাইতে পিটাইতে নিয়া গেল তহন মনে হইচে আমার এই জন্ম ভুল। এহন আমি সুস্থ্য হইতে চাই। ফিরতে চাই স্বাভাবিক জীবনে।’ এভাবেই বলছিলেন বরিশাল নগরীর আলেকান্দা কাজী পাড়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক। যাকে দীর্ঘদিন এলাকার মানুষ চিনতো চিহ্নিত গাঁজা ব্যবসায়ী হিসেবে।
যে নিজ হাতে অপরের সন্তানকে মরণ নেশার রসদ জুগিয়েছে তার সন্তানরা যখন এই নেশায় আসক্ত হতে পারে বা আকৃষ্ট হচ্ছে এমন উদাহরণ টের পেয়ে আর কোন সন্তানের সর্বনাশ না করার প্রতিজ্ঞা করেছে এই মাদক ব্যবসায়ী।
রফিক এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। নিজের পরিবার আর সন্তানদের সাথে নিয়ে আর দশটি খেটে খাওয়া মানুষের মত পরিশ্রম করে বাঁচতে চায়।
তার ভাষ্যানুযায়ী, এই জগতে নিজেকে জড়িয়ে যে অন্যায় তিনি করেছেন তার সাজা কেবলমাত্র সৃষ্টিকর্তা দিতে পারবেন। এই জগতের সাথে মিশেই তাকে ছিন্ন করতে হয়েছে জন্ম দাত্রি মা, পরিবার ও স্বজনদের। এখন রফিক দিশেহারা হয়ে তার মায়ের কাছে ফিরতে চায়। আর কোন অপরাধী সৃষ্টির কাজ না করে একজন নিম্নবিত্ত মানুষ হয়েও ফিরে আসতে চায় মাদকের রাজ্য থেকে।
তার ভাষ্য অনুযায়ী মাদক বিক্রি আর প্রত্যাহ নিজের সন্তানদের হত্যা করা সমান কথা। কারণ তার কাছ থেকে যারাই মাদক সংগ্রহ করেছে তারা সবাই কারো না কারো কিশোর সন্তান। সম্প্রতি এই রফিক ধর্মীয় উপসনালয় ও ধর্ম গ্রন্থ ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করেছে আর কখনো তার হাতে মাদক দ্রব্য উঠবেনা। এখন সে সবার কাছে সহানুভূতি ও সহযোগিতা কামনা করছে যাতে অন্ধকার জগৎ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
এ ব্যাপারে প্রশাসনের সাথে কথা বলা হলে তারা আশ্বস্ত করে বলেন, কোন অন্ধকার জগতের মানুষ নিজের ভুল বুঝতে পেরে যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় তাহলে তাকে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।