এস বাসু দাশ: পাহাড়ে রয়েছে অসংখ্য ঝিরি বা ছড়া। ঝিরি হচ্ছে ছোট ধরনের অগভীর প্রাকৃতিক জলপ্রবাহ। পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার রিজার্ভ এলাকা থেকে ঝিরি খুঁড়ে চলছে অবাধে পাথর উত্তোলন।
প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় এই অপকাণ্ডে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলীকদমের নয়াপাড়া ইউনিয়নের মেনথক কারবারি পাড়ার পাশে দুংশী খাল থেকে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন ধরে অবাধে পাথর উত্তোলন করার ফলে শুকিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ি ঝিরিগুলো, ফলে পানি সঙ্কটের কারণে কমছে কৃষি আবাদ। অন্যদিকে স্থানীয়রাও পড়ছেন পানিসঙ্কটে।
স্থানীয়রা জানান, এখানে কয়েকজন মিলে রিজার্ভ এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করছেন ফ্রি স্টাইলে। পাথর উত্তোলন করে সেখানেই মজুত করে রেখেছেন তারা, যা আনুমানিক ৩০ হাজার ঘনফুট। প্রতি ঘনফুট পাথর বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়।
এই ব্যাপারে অভিযুক্তদের একজন বলেন, আমি পাথর ভেঙেছি, তবে এখন কেউ পাথর নিচ্ছে না তাই ভাঙা বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পাথর উত্তোলন না করার জন্য এদের অনেকবার বলা হয়েছে। কিন্তু তারা প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছেন গত বেশ কয়েক বছর ধরে। বছরের পর বছর ধরে পাথর উত্তোলন করার কারণে ঝিরিগুলোতে এখন আর দৃশ্যমান পাথর দেখা যায়না।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, জেলায় পাথর আহরণ নিষিদ্ধ হলেও পাথর উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসক থেকে আগের নেওয়া অনুমতি পত্র দিয়ে অনেকে বছরের পর বছর এলাকার সবকয়টি ঝিরি ও পাহাড় খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করে চলেছেন।
স্থানীয় মেম্বার রুমতুই ম্রো বলেন, পাথর উত্তোলনকারীদের বেশ কয়েকবার নিষেধ করা হলেও পাথর উত্তোলন করেই যাচ্ছে। আমি সপ্তাহখানেক আগে গিয়ে সরাসরি নিষেধ করেছি। পাথর ভাঙার হাতুড়িসহ কিছু সরঞ্জাম রেখে দিয়েছি।
এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মাতামুহুরি বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কাসেম জানান, রিজার্ভ এলাকায় পাথর উত্তোলন হচ্ছে বিষয়টি জেনেছি কয়েকদিন আগে। সরজমিনে গিয়েছিলাম। তবে লোকেশান ভুল হওয়ার কারণে পাথরের মজুত রাখা স্থানে পৌঁছতে পারিনি, ফের অভিযান শুরু হবে।
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সায়েদ ইকবাল বলেন, পার্বত্য এলাকায় পাথর উত্তোলনের অনুমতি নেই। যেসব স্থানে পাথর উত্তোলন চলছে, সেসব স্থানে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে।