সুকান্ত বিশ্বাস: আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশ ও বিদেশে মিষ্টি পানের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার পান চাষিরা দিন দিন ঘুরে দাঁড়াচ্ছিলো। তবে, করোনার প্রভাবে বিদেশে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ও দাম কম থাকার কারণে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা। এতে অনেক চাষি পান বরজ ভেঙে অন্যচাষে ঝুঁকছেন।
জানা গেছে, মিষ্টি পান চাষে উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত বালিয়াকান্দি উপজেলা। এ অঞ্চলের পানের সুখ্যাতি বহু পুরনো। এখানে সাধারণত দু’জাতের পান উৎপাদন হয়। মিষ্টি পান আর সাচি পান। এখানকার মিষ্টি পান চাহিদা মিটিয়ে ৮টি দেশে রপ্তানি হতো। মিষ্টি পান রাজবাড়ী জেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হতো। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলাতে ৮৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি পান ও সাচি পানের আবাদ করা হয়েছে। ৬৫৮টি মিষ্টি পানের বরজ, ১৫৬টি সাচি পান বরজসহ ৮১৪টি বরজে পান চাষ করা হচ্ছে।
পান চাষি আ. খালেক ও শহীদ শেখ জানান বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চরআড়কান্দি, ইলিশকোল, স্বর্প বেতেঙ্গা, খালকুলা, বালিয়াকান্দি, বহরপুর, যদুপুর এলাকায় ব্যাপক পানের আবাদ হয়।
এসব চাষিরা পূর্ব পুরুষের আমল থেকে পানের চাষ করে আসছেন। সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে অনেকেই এখনও পান চাষ করছেন।
পানচাষি সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, গত বছর করোনার কারণে পানে লোকসান গুনতে হয়। আগে বিদেশে প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর পান বিদেশে পাঠাতে পারছি না। দাম না থাকার কারণে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে।
তিনি জানান, অর্থকরী ফসল পান হলেও কোন সহযোগিতাই পাননা তারা। কৃষি অফিস থেকেও কোনো প্রকার সহযোগীতা মেলে না। সরকারিভাবে তাদেরকে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে পান চাষকে আরো লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার মিষ্টি পান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে অনেক দেশে রপ্তানি করা হতো। এখন রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তবে পান রপ্তানির চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। পানচাষিদের সব সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ প্রদান করছেন।