জায়েদ খান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে তার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন: হাইকোর্ট

শিল্পী সমিতির ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদটি নিয়ে নাটকীয়তা যেন থামছেই না। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় উত্তেজনা বিরাজ করছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট মানুষদের মধ্যে। রবিবার সন্ধ্যায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণের শপথ নেয়ার পরদিনই আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এই ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদটি!

চিত্রনায়ক জায়েদ খান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে তার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন এবং তার কাজে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এমন সিদ্ধান্তের পর উচ্ছ্বসিত জায়েদ খান।

এদিন দুপুরে আদালত থেকে বের হয়েই গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে হাইকোর্টের আদেশ নিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জায়েদ। বলেন, আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। মহামান্য হাইকোর্টকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি আমার আইনজীবীদের কাছেও কৃতজ্ঞতা, আমাকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে পাশে ছিলেন।

এসময় জায়েদ বলেন, ‘যে কোনো পরিস্থিতিতে ন্যায়সঙ্গতভাবে আমি আইনী লড়াই চালিয়ে যাবো।’

নিপুণের অভিযোগের ভিত্তিতে জায়েদ এসময় বলেন, নিপুণের সমস্ত অভিযোগই ছিলো অবৈধ, তার নিজের মনগড়া। শুরু থেকেই বিভিন্নভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু পারেনি। টানা দুইবার আমি শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি শিল্পীদের ভোটে। শিল্পীদের ভালোবাসার কারণেই আমি সব বাধা অতিক্রম করতে পেরেছি।

এসময় জায়েদ শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডের দুই সদস্যের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, নির্বাচনের আপিল বোর্ডের প্রধান সোহানুর রহমান সোহান ও সদস্য মোহাম্মদ হোসেন আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেনস্থা করেছে। সোহান ভাই জাজ, উনি নিজে নিপুণকে নিয়ে একটি মিটিং ডেকে তার হাত ধরে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। এসময় কাঞ্চন ভাইও উপস্থিত ছিলেন। এই যদি হয় চলচ্চিত্রের মানুষদের কাছ থেকে প্রাপ্তি, তাহলে কোথায় যাবো!

ত ২৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে শনিবার ভোরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহিদুল হারুন এফডিসিতে ফলাফল ঘোষণা করেন। তাতে গত দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির সভাপতি থাকা মিশা সওদাগরকে ৪৩ ভোটে হারিয়ে এবার সভাপতি হন ইলিয়াস কাঞ্চন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে হারেন ইলিয়াস কাঞ্চনের প্যানেলের প্রার্থী নিপুণ আক্তার।

তবে অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ এনে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন নিপুণ। সে আবেদনে প্রেক্ষাপটে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক জায়েদ খান ও চুন্নুর বিষয়ে শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বৈঠকে বসে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আপিল বোর্ড।

বৈঠকে শেষে বোর্ডের প্রধান চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান জা‌য়ে‌দের প্রার্থিতা বাতিল বলে সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণ‌কে বিনা প্রতিদ্ব‌ন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেন। রবিবার ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ পরিষদের বিজয়ীরা শপথ নেন।

প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের করা রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে সোমবার রুলসহ আদেশ দেন।

আদালতে জায়েদ খানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, আহসানুল করিম ও নাহিদ সুলতানা যুথি। নিপুণের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

শিল্পী সমিতির নির্বাচন পরবর্তী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেয়া চিঠির কার্যকারিতা এবং নির্বাচনী আপিল বোর্ড কর্তৃক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তও স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী।

Print Friendly

Related Posts