জলবেষ্টিত ভোলার সংগ্রামীদের সাহিত্য

‘ধান-সুপারি ইলিশ গোলা, এই নিয়ে ভোলা’ কবির এ ভোলাকে যদি ওপর থেকে দেখা যায়-তবে দ্যাখেন, সবুজের দ্বীপ হিসাবে। এখানে চাহিদার চেয়েও বেশি পরিমাণে রয়েছে গাছ। অতীতের মতো এ দ্বীপ এখনো ধান, সুপারি, নারিকেল, ডাল ও ইলিশ উৎপাদনে সমৃদ্ধ। যোগ হয়েছে গ্যাস।

ভোলার চারপাশে অসংখ্য দ্বীপে যেমন ফসল ফলে, তেমনি চরে বেড়ায় গবাদিপশু। এখানে ভৈইষা দৈয়ের (মহিষের দধি) আলাদা কদর। ভোলার ঐতিহ্য। খাবারের শেষ পাতে মহিষের দধি আর খেজুরের গুড় দিয়ে ভাত মাখিয়ে না খেলে অনেকের খাওয়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যদিও সব ওয়াক্তে এখন দুধ-দই খাওয়া সম্ভব নয়। তবে আচার-অনুষ্ঠানে না খাওয়ালে রীতিমতো লজ্জায় পড়া তো দূরে থাক, সম্পর্ক ছুটে যায়। ভৈইষা দধির মতো ভোলার মিষ্টিও ঐতিহ্যবাহী। ঘুইংগারহাটের ছানার রসগোল্লা, চমচম, ছানার বরফি। ভৈইষা দই, মিষ্টি আর পাকা পাঙ্গাশ মাছ দিয়ে ঢাকার বাড়িতে কুটিল লোকেরা জটিল সমস্যা সমাধান করে আসার গল্প বহুল প্রচলিত।

ষাঁড়ের লড়াই, চেলা মহিষের লড়াই বসত শীতের মাঠে। মহিষের মতো ভোলার আরেক ঐতিহ্য মাইলের পর মাইল সুপারি বাগান। ভাঙনের কারণে এখানের পুরাকীর্তি বিলীন হয়ে যায়। ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় কিছু শতায়ু জমিদার বাড়ি ও মসজিদ এখনো বিদ্যমান আছে।

২.

সম্রাট আকবরের সেনাপতি শাহাবাজ খান মগ-পর্তুগিজদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে ভোলার মানুষকে যে লাঠি চালানো শিখিয়েছিল, তা লাঠি খেলার শৈল্পিক রূপ এখনো বিদ্যমান। উৎসব-পার্বণে এখনো লাঠিখেলার দল ঢোল-ডাগর বাজিয়ে আসর মাত করে। বসে মেলা। এক সময়ের তুখোড় নাট্যাভিনেতা, আবৃত্তিকার নাজিউর রহমান কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এম ফারুকুর রহমান বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি এসডিওদের তদারকিতে সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠে, বাংলা স্কুল মাঠে, গার্লস স্কুলের মাঠে বৈশাখী মেলা বসত। সেখানে গ্রামের নারীরা তাদের হাতের তৈরি সরঞ্জামাদি বিক্রি করতে আসত। গ্রামে রাতভর যাত্রাপালা হতো। কিন্তু শহরে মঞ্চায়ন হতো নাটক। তিনি বলেন, গত শতাব্দীর ৩০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে সচীপালের নেতৃত্বে ভোলায় মঞ্চনাটক শুরু হয়। তাদের পরই শিশুকালে অনুজ কাহালির নেতৃত্বে আমরা অভিনয় শুরু করি। ষাটের দশকে যখন তাদের কঙ্কাবতীর ঘাট নাটকের মহড়া চলছিল বাংলা স্কুলের একটি কক্ষে হঠাৎ শাজাহান (মোশারেফ হোসেন শাজাহান-সাবেক মন্ত্রী) কোত্থেকে এসে বলল, আমিও নাটকে অভিনয় করব। আমাকেও একটা পাঠ দেও! তখন সে জীবনের প্রথম একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করল। পরে তারই নেতৃত্বে গড়ে উঠল ‘মেঘনা শিল্পী সংসদ’। শিল্পী সংসদের নেতৃত্বে শাজাহানের লেখা একাধিক নাটক ভোলার টাউন হলে মঞ্চস্থ হয়েছে। তার লেখা ‘নীড়ভাঙা ঝড়’ নাটকের প্রচার হয় হেলিকপ্টারে।

কালীনাথ রায়েরবাজার এলাকায় নাট্যচর্চা করত দ্বীপাঞ্চল সাংস্কৃতিক সংগঠন, যুগীরঘোলের উত্তরণ থিয়েটার, চরফ্যাশন উপজেলায় মালঞ্চ নাট্যম, বাদল দেবনাথ গঠন করেন, দেশ থিয়েটার। লালমোহনে নাট্যচর্চা করত, লেখক নুরুল আমিনের ‘অঙ্গীকার নাট্যমী’, কবি রিপন সানের ‘তোলপাড় কৃষ্টি সংসার’ ও সাংবাদিক জসিম উদ্দিনের ‘প্রজন্ম থিয়েটার’। ভোলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভোলার গুণী শিল্পীরা গান পরিবেশন করতেন। যারা ছিলেন জাতীয় মানের। তাদের মধ্যে ছিল, কালাচান নাগ, মানষ কর, হেলালউদ্দিন ফেলুমিয়া, গুরুদাস নাগ, মন্টু তালুকদার, দক্ষিণারঞ্জন মজুমদার। স্বাধীনতার পরবর্তীতে মঞ্জুর আহমেদ, অঞ্জনা সাহা, স্বাতী করঞ্জাই, উত্তম ঘোষ, অনামিকা মজুমদার, চন্দ্রশেখর ব্রহ্মচারী গান পরিবেশন করত। প্রদীপ দে ও ভাস্কর মজুমদার জাতীয় মানের যন্ত্রশিল্পী।

সাংবাদিক নজরুল হক অনু বলেন, ‘স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের উদ্যোগে নাটক মঞ্চস্থ হতো। স্কুল ম্যাগাজিনে শিক্ষার্থীরা গল্প-কবিতা লিখত। তখন আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার মতো প্রতি বিদ্যালয়ের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। এগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। নাটক যেখানে মঞ্চায়ন হবে, সেই টাউন হল থাকে তালামারা, তার চারপাশে ঝুপড়ি, নোংরা, অবৈধ দোকান। ভোলায় বেশ কিছু জাতীয় মানের আবৃত্তি শিল্পী রয়েছে। রেহানা ফেরদৌস, সামস-উল-আলম মিঠু, জাভেদ ইকবাল, আবু সাঈদ লিটন, মশিউর রহমান পিংকু, এসএম বাহাউদ্দিন, ভোলা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আবিদুল আলম, কবি শামসুল আলম শিহাবসহ এক ঝাঁক নতুন আবৃত্তি শিল্পী সংগঠনভিত্তিক আবৃত্তিচর্চা করে আসছে নব্বই দশক থেকে। ভোলা আবৃত্তি সংসদ, বিহঙ্গ সাহিত্য গোষ্ঠী, জীবন-পুরাণ আবৃত্তি একাডেমি, কাব্যাঙ্গন, ভোরের পাখিরাসহ বেশ কিছু সংগঠন শুধু আবৃত্তিচর্চা করছে। লিটলম্যাগ বা সাহিত্য পত্রিকা বের করা ছিল একটা রেওয়াজ। ২১ ফেব্রুয়ারি ও পূজা-পার্বণে এলেই পাড়ায় পাড়ায় খুদে লেখকদের গল্প-কবিতা নিয়ে বের হতো সাহিত্য পত্রিকা। লেখা ছাপা হলে, বড়রা পড়ে বাহবা দিতেন। নজরুল হক অনু বলেন, ষাটের দশকে মোশারেফ হোসেন শাজাহানের সম্পাদনায় বের হতো, সহিত্য পত্রিকা ‘মেঘনা’। সত্তরের দশকে ‘পাঞ্জেরী সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৯৫-৯৬ সালে গল্পকার ফরিদুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে গঠন হয় ভোলা সাহিত্য একাডেমি। লালমোহনে ছিল চতুরঙ্গ সাহিত্য একাডেমি। চতুরঙ্গ নামে একটি পত্রিকা বের হতো, ভোলা সাহিত্য একাডেমি সাহিত্যের ছোট কাগজ কথা, ‘বিন্দু’ বের করেছে কয়েক বছর। বের হয়েছে ‘দেউরকা’ ও ‘অনন্ত’। চাঁদের হাটের সভাপতি নজরুল হক অনুর সম্পাদনায় ১৯৮৬ সাল নিয়মিত বের হতো লিটল ম্যাগাজিন, ‘ঘাসফুল’,। তিনি অনিয়মিত সম্পাদনা করেছেন ‘অনির্বাণ’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘চেতনায় হানরে আঘাত’, ‘জুঁই’, ‘পাপিয়া’ নামক লিটলম্যাগ। সাংবাদিক আল-আমিনের সম্পাদনায় বের হয়েছে ‘ভোলা বিচিত্রা’। আমিরুল ইসলাম বাসেতের সম্পাদনায় ‘মেঘদূত’। মিজানুর রহমানের সম্পাদনায় বের হয়েছে ‘কচিকণ্ঠ’। লালমোহনের জসিমউদ্দিনের সম্পাদনায় বের হচ্ছে ‘সময়ের শিখা’।

৩.

কবি মোজাম্মেল হকের দ্বীপজেলায় লেখক, সাহিত্যিক-সাংবাদিক কম জন্মায়নি। কবি নাসির আহমেদ, মোখলেসুর রহমান দরবেশ, বিচারপতি ফজলুল করিম, বিচারপতি এআরএম আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, সুফি হাবিবুর রহমান, ড. আবুল হাসান শামসুদ্দিন, প্রফেসর আ.ফ.ম সিরাজুদ্দৌলা চৌধুরী, প্রফেসর মফিজুর রহমান, অধ্যক্ষ মোস্তফা দৌলত, ড. হারুন কে ইউসুফ, প্রফেসর ড. কামরুল আলম, কর্নেল মোহাম্মদ ফরিদ, হাসান মাহমুদ, শাহ মতিন টিপু, প্রফেসর হাস্নাহেনা বকুল, প্রফেসর মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী, ড. মো. শফিকুল ইসলাম, হাজী আবদুর জব্বার, রাজীব মীর, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ড. তাইবুর নাহার রশিদ (কবিরত্ন), ড. খালেদা সালাউদ্দিন, আবুল কালাম মোস্তফা, মোস্তফা হারুন, একেএম মকবুল আহমেদ, অধ্যাপক সিরাজুল হক, কবি আমিনুল হক আনওয়ার, এমএ তাহের, এম হাবিবুর রহমান, মুহাম্মদ আমির খসরু, ফরিদ হোসেন বাবুল, শহিদুল ইসলাম, একে নাসির আহমেদ সেলিম, কবি রাসেদুজ্জামান, ইমরান মাঝি, মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী, জুননু রাইন, মো. হুমায়ুন কবির, নেয়ামতউল্যাহ, এনএন আওলিয়া বেগম, কালাম ফয়েজী, মো. মফিজুল ইসলাম, নোমান সালমান, হুমায়রা সুরভী, রিপন সানসহ অনেক। নব্বই দশকে শিল্পকলায় বসা সাহিত্য আড্ডার নিয়মিত সদস্য ছিলেন, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কবি ওমর আলী তালুকদার, কবি অনন্ত জাহিদ, কবি অপরেশ মিশ্র হারুন, সাংবাদিক মোকাম্মেল হক মিলন, কবি খায়রুল ইসলাম, গল্পকার ফরিদুল ইসলাম মিলন, কবি জুলফিকার আলী, নাট্যকর্মী মোসলেহউদ্দিন হীরা, আসতেন সংগঠক, কবি, সাংবাদিক, প্রভাষক অমিতাভ অপু, শিক্ষা কর্মকর্তা সংগঠক মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম।

এ আড্ডায় আসতেন বোরহানউদ্দিন থেকে কবি, সংগীতশিল্পী হাসান মাহমুদ। আরেক গুণী মানুষ প্রয়াত কিশোর কুমার, আসতেন চরফ্যাশন থেকে আনজামুল আলম মনির, ফয়সাল নোই, লালমোহন থেকে সাংবাদিক জাকির হোসেন, নাজিউর রহমান কলেজের উপধ্যাক্ষ পিযুষকান্তি হালদার, কবি রাবেয়া আলী ঝুনু, আসতেন উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সংগঠক সাইফুল আলম বাপ্পি, কবি সাংবাদিক জুন্নু রায়হান।

অনিয়মিত সাহিত্য আড্ডায় বসেছি, বাংলা স্কুলের সৃষ্টিতলায়, সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, শহিদ মিনারের পাদদেশে ও ভোলা প্রেস ক্লাবে। এসব সাহিত্য আড্ডায় যোগ দিয়েছেন, কবি আল মনির, কবি হাওলাদার মাকসুদ, ঢাকা থেকে আসতেন সাব্বির আহমেদ, তজুমদ্দিন সরকারি কলেজের দর্শনের প্রভাষক মিলি বসাক, আসতেন গল্পকার শিক্ষক কাজল কৌশিক, কবি মাহবুবুল আলম নিরব, শিক্ষক, কবি আহমুদা মনি, কবি জহরলাল দাস। যারা নিয়মিত লেখেন।

নব্বইর দশকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার পোস্ট অফিসের বিপরীত পাশে সাহিত্যপ্রেমী নুরুল আমিন হিরন ‘বর্ণমালা’ নামের একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি গড়ে তোলেন। নতুন পাঠক সৃষ্টিতে এ লাইব্রেরির ভূমিকা ছিল অসামান্য। সব শ্রেণির বইয়ের পাশাপাশি একদিন পরে আসা দৈনিক পত্রিকাও রাখা হতো। তখন শুক্রবারের সাহিত্য পাতায় কবিতা, গল্পের সঙ্গে নামকরা সব লেখকের ধারাবাহিক উপন্যাস ছাপা হতো। কে আগে পড়বে এটা নিয়েও টানাটানি চলত। সেখানে সব বয়সি পাঠকের উপস্থিতি ছিল। ছিল নিয়মিত সাহিত্য আড্ডা। আড্ডায় থাকতেন শিক্ষক ননী গোপাল দাস, কবি, সাংবাদিক, কণ্ঠশিল্পী হাসান মাহমুদ, ব্যাংকার লেখক এবিএম আমিনুল্যাহ্, কবি জুননু রাইন, প্রয়াত সাংবাদিক কিশোর কুমার, সাংবাদিক ওমর ফারুক তারেক, শিক্ষক সাংবাদিক মোবাশ্বির হাসান শিপন, সরকারি কর্মকর্তা মাহবুব আলম, শিক্ষক তৌফিকুল ইসলাম রুমু, সাংবাদিক ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম লিটন।

মফস্বলে বসে নিয়মিত লেখেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলার শিক্ষক কবি মোবাশ্বির হাসান শিপন, সাংবাদিক ছোটন সাহা, এএসএম আরিফুল ইসলাম, মো. নোমান, নিহার মোশাররফ, গাজী তাহেরুল আলম, ইলিয়াছ রানা, মোঃ জুলফিকার, জাভেদ নিগাবান, বাবু আহমেদ, চরফ্যাশন উপজেলার অধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ দুলাল, জামাল ভুঁইয়া, মাহমুদা খানম, লালমোহন উপজেলার কবি ফিরোজ মাহমুদ, সাব্বির আলম বাবু, সালমা জাহান সীমা, তজুমদ্দিনের নীলা আহমেদ, এমএস জালাল বিল্লাহ, সফিকুল ইসলাম সবুজ, এম অলিউল্যাহ হাসনাইন, ইলিয়াছ সানি, খন্দকার মো. ইব্রাহীম, সালেহউদ্দিন তাজ। তজুমদ্দিন সম্ভুপুরের শিক্ষক গল্পকার এরশাদ সোহেল জানান, বোরহানউদ্দিন কুঞ্জেরহাটে উপকূলীয় সাহিত্য সংসদে তারা এখনো মাঝে মাঝে সাহিত্য আড্ডায় বসেন।

তজুমদ্দিন উপজেলার খাসেরহাট বাজারে শরীফ আল আমিন ও তার বন্ধুরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠা করে লাইব্রেরি। যার এখনো ব্যক্তিগত উদ্যোগেই পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া ভোলা শহরে মুসলিম লাইব্রেরি, সরকারি পাবলিক লাইব্রেরি চলমান আছে।

ভোলায় সাহিত্য আড্ডা এখন খুব একটা হয় না। যারা নিয়মিত লেখেন, তারা ফেসবুকের পাতায় তুলে দেন। নইলে পত্রিকায় ছাপা হয়। ছাপা লেখা দেন। অনেকে গান-কবিতার মহড়া লাইবে দেখান। যারা পড়েন, যারা দেখেন, তারা ভালোলাগার অনুভূতি প্রকাশ করেন লেখার নিচেই। এ সহজলভ্য পদ্ধতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলেও, সাহিত্যের আসল রস যে এতে পাওয়া যায় না, লেখক-পাঠকরা তা এখন উপলব্ধি করা শুরু করেছে।

ভোলার ভাষায় যাকে বলে ‘ছল্লক’। উৎসব, আনন্দে, আবেগ প্রকাশে ব্যবহার করে এই ছল্লক

১. ‘দিনে করে শতেক বিয়া, কাবিন নাহি হয়,

পোলা-মাইয়ার বাপ হেইতে, কোনো কালে নয়’।

২. ‘নদীর তীরে বাস, ভাবনা বারমাস’।

৩. ‘আম পাতা চিরিচিরি/ কাডোল পাতা খুচি,

ভাইয়া যদি ঘরে থাহে/ ভাউজে কততো খুশি’।

৪. ‘আনহল মালেক লতা, এই হল পাইলা কোথা,

রাজার রাজ্যেতে নাই, বাইন্যার দোকানে নাই,

হায়! সখি করবো কি! কৃষ্ণরে বলবো কি?’

৫. ‘জামাই আইছে কামাইয়া, ছত্তি ধরো নামাইয়া,

ছত্তির উপোর গামছা, তলোয় বিবির তামশা।’

৬. ‘পুষ্কুনিতে নাইরে মাছ, কি করিবে ছোপ,

যেই নারীর স্বামী নাই, কি করিবে রূপ’।

৭. ‘উপরেতে টুঙটাঙ, নগরের বাসা,

আদারে দেখ্ ছাও খায়, এ কি তামশা!’

৮. ‘উরপে দিয়া যায়রে পোক্ষি, নিচচে পড়ে ছায়া

দ্যাশের বন্ধু বিদেশ গ্যালে, কি যে লাগে মায়া’।

৯. ‘ব্যাগের মাইধ্যে কৈ মাছ, খচর-মচোর করে,

মনের মধ্যে বদ রাইখ্যা, মুখে আদর করে’।

Print Friendly

Related Posts