সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘হাওয়া’ সিনেমায় বন্য প্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করছে বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)।
বুধবার (১০ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ৩৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের সমন্বিত এই জোটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, “গত ২৯ জুলাই মুক্তি পাওয়া ব্যতিক্রমী চলচ্চিত্র ‘হাওয়া’ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমরা বাংলা চলচ্চিত্রের এই সুদিনকে স্বাগত জানাই।
কেননা আমরা বিশ্বাস করি দায়িত্বশীল সংস্কৃতি বা চলচ্চিত্র মানুষকে সুপথ দেখাতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত চলচ্চিত্রটির রিভিউ এবং হলফেরত দর্শকদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি চলচ্চিত্রটিতে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি অবস্থায় প্রদর্শন ও একপর্যায়ে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে। যার মাধ্যমে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। একই সঙ্গে সেই চলচ্চিত্রের প্রকাশিত বিহাইন্ড দ্য সিনে সামুদ্রিক প্রাণী শাপলাপাতা মাছও তুলে আনতে দেখা গেছে। ”
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন চলচ্চিত্রটি হাজার হাজার মানুষ দেখছে। আমরা মনে করছি সমাজের আইডলদের মাধ্যমে এ ধরনের বন্য প্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ চিত্রায়ণের কারণে সাধারণ মানুষ পাখি শিকার, খাঁচায় পোষা ও হত্যা করে খাওয়ায় উৎসাহিত হবে এবং জেলেরা শাপলাপাতা মাছ শিকারেও উৎসাহিত হবে। যা প্রকৃতি থেকে এই প্রাণীদের বিলুপ্ত করে দিতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে পুরো প্রতিবেশ ব্যবস্থায়। তাই দ্রুত এই চিত্র দেখানো বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ’
অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, দুঃখজনক হলেও বাস্তব, চলচ্চিত্রটি প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের কাছে পৌঁছলেও এই চলচ্চিত্রে বন্য প্রাণী সংক্রান্ত সুস্পষ্ট অপরাধের দৃশ্য প্রদর্শন নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে। এর মাধ্যমে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও আইন বাস্তবায়নে সংস্থাটির আন্তরিকতার ঘাটতি সুস্পষ্ট হচ্ছে। যা দেশের সচেতন নাগরিকদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখনই চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন বন্ধ করে আইন লঙ্ঘনের চিত্র সংস্কার করা এবং বন্য প্রাণী হত্যার দৃশ্য দেখানোর জন্য চলচ্চিত্রটির পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট অভিনেতাকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
শিগগিরই ব্যবস্থা না নিলে বন্য প্রাণী রক্ষার স্বার্থে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো আন্দোলনে নামার পাশাপাশি বন বিভাগ এবং চলচ্চিত্রটির সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপেও যেতে বাধ্য হবে বলে বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।