বাংলাদেশ লেখক সমিতির পাঁচশ’তম সাহিত্য সভা

আতাতুর্ক কামাল পাশা: দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হল বাংলাদেশ লেখক সমিতির পাঁচশততম সাহিত্য সভা। বাংলাদেশ লেখক সমিতিতে অনেক বরেণ্য কথাশিল্পী সংযুক্ত থাকলেও করোনার জন্য মাঝখানে খুব একটা সাহিত্য সভা হয়নি।

গত ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হলো এই সাহিত্য সভা সেগুন বাগিচার বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তানে। ছোট্ট এই মিলনায়তনে বেশ কিছু দর্শক শ্রোতার জমায়েত হয়েছিল।

বিকেল ৩:৪৫ মিনিটে মোঃ ইসমাইলের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর পর স্বাগত বক্তব্য রাখেন রবিউল মাশরাফি। এর পর ৪০ জন কবি ও সাহিত্যপ্রেমী তাদের স্বরচিত কবিতা ও গল্প পাঠ করেন। এরপর বক্তব্য দিতে ওঠেন, ঔপন্যাসিক ও গল্পকার ইউসুফ শরীফ।

তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট সাংবাদিক মুজিবুর রহমান খাঁকে তার দায়িত্বে প্রকাশিত সাহিত্য পাতায় শতকরা ৫০ ভাগ তরুণ লেখকের লেখা প্রকাশের আহবান জানান। তিনি বিগত ছেচল্লিশ বছর ধরে টিকে থাকা বাংলাদেশ লেখক সমিতির পাঁচশততম সাহিত্য সভা দেখে বেশ প্রশংসা করেন। অনেক লেখক গড়ার কারিগর সাংবাদিক ও প্রিন্সিপ্যাল ইব্রাহীম খাঁয়ের সহযোগী ফরহাদ খাঁকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন এই সমিতির নেপথ্য সংগঠক হিসেবে।

অতিথিদের মধ্যে বিশিষ্ট চলচ্চিত্র আলোচক ও নজরুল গবেষক অনুপম হায়াৎ অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত কবিতাগুলোর ওপর আলোচনা করেন। বাংলাদেশ লেখক সমিতির এ অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, কবি নজরুলের অনেক লেখা আমাদের অধরা রয়ে গেছে, কিংবা বিশ্লেষণ ও আলোচনার বাইরে রয়ে গেছে। কবিকে নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি এ প্রজন্মের লেখকদের আহবান জানান।

অতিথি ড. শহীদুল্লাহ আনসারী অনুষ্ঠানের সফলতা দেখে মুগ্ধ হন। তিনি কবি মহিউদ্দিন আকবরকে বিশেষভাবে স্মরণ করেন যিনি গতবছর প্রয়াত হন। ড. শহীদুল্লাহ আনসারী বলেন, একজন সংগঠক, সম্পাদক, লেখক হিসেবে তার তুলনা হয় না। এর পর কবি মহিউদ্দিন আকবরকে মরণোত্তর সম্মাননা ক্রেস্ট ও কিছু নগদ অর্থ তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রের হাতে তুলে দেয়া হয়।

এর পর বাংলাদেশ লেখক সমিতির সভাপতি এবং বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার রুহুল আমিন বাচ্চু তাঁর বক্তব্য রাখেন। তিনি অতীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ লেখক সমিতির মুক্তাঙ্গন সাহিত্য আড্ডাগুলোর কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বিগত ১২-১৩ বছর ধরে তিনি বাংলাদেশ লেখক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি আরও বলেন, এ সময়ে আমার দায়িত্ব পালনকালে আমার অনেক ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে সেজন্য আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন।

এ অনুষ্ঠানে সমিতির অতীত দিনের কার্যক্রমে প্রকাশিত সংবাদ ও চিত্র এবং প্রকাশিত পত্রিকা বিশিষ্টজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষের দিকে সমিতির উপদেষ্টা আলম হোসেন নতুন কমিটির ঘোষণা দেন। নতুন কমিটির সভাপতি রানা জামানের নাম ঘোষণা করেন।

রানা জামান তার বক্তব্যে আগামীতে নতুন ও পুরাতন সদস্যদের নিয়ে আগামীর সাহিত্য সভার দিক নির্দেশনামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন, বর্তমান সম্পাদক রবিউল মাশরাফি ও কোষাধ্যক্ষ কবি ফরিদ সাঈদ। রাত প্রায় সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠানশেষে সবার মাঝে নাশতা পরিবেশন করা হয়।

ছবি পরিচিতি: বাংলাদেশ লেখক সমিতির সভায় (সামনে বাঁ দিক থেকে) ইউসুফ শরীফ, রুহুল আমিন বাচ্চু ও ড. শহীদুল্লাহ আনসারী

Print Friendly

Related Posts