সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের শাল্লায় শালিসের কথা বলে কিশোরি ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ও বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু ও একই পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) দেবব্রত দাস মাতবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম। এর আগে বিকালে সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্টেশন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে শাল্লায় নির্বাচনী জনসংযোগে কিশোরি ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টুকে প্রকাশ্যে অংশ নিতে দেখা যায়। এমনকি তার ইউপি অফিসে এক মতবিনিময় সভায়ও তিনি অংশ নেন। বিষয়টি ধর্ষণের শিকার কিশোরির ভাই শাল্লা থানার ওসিকে মোবাইল ফোনে জানালেও আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। বিষয়টি সর্বস্তরে জানাজানি হয়ে গেলে সমালোচনায় পড়ে শাল্লা থানা পুলিশ। এরপর পুলিশ শুক্রবার বিকালে মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু ও ইউপি সদস্য দেবব্রত দাস মাতবরকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ধর্ষণ মামলার প্রধান দুই আসামিকে আজ (শুক্রবার) বিকালে সুনামগঞ্জ শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের মলয় দাসের সাথে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এক কিশোরীর। কিন্তু কিশোরীকে বিয়ে না করায় গত জানুয়ারি মাসে ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে প্রেমিক মলয় দাস গ্রেপ্তার হন। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর জেল থেকে বের হয়ে অন্যত্র বিয়ে করার প্রস্তুতি নিলে গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই কিশোরী মলয়ের বাড়িতে অবস্থান নেয়। মলয়ের পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুকে জানায়। চেয়ারম্যান মলয়ের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে দেওয়ার কথা বলে ওই কিশোরীকে রাতেই বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে সালিশের কথা বলে কিশোরীকে তুলে এনে বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষে চেয়ারম্যান নান্টু ও ইউপি সদস্য দেবব্রত মিলে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ অভিযোগে ওই দিন রাতে শাল্লা থানায় তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়। এরপর থেকে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু ও এইউপি সদস্য (মেম্বার) দেবব্রত দাস মাতবর পলাতক ছিলেন।