ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বরত চিকিৎসক সিএইচসিপি আব্দুস সালামের পরিবর্তে রোগী দেখেন তার স্ত্রী শামীমা সুবর্ণা। সেই সাথে ওষুধও বিতরণ করেন তিনি। যদিও তার নেই কোন একাডেমিক সনদপত্র।
রোববার (২ অক্টোবর) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানোখার ইউনিয়নের রত্নাই কমিউনিটি ক্লিনিকে দেখা যায় এই চিত্র।
স্বামীর পরিবর্তে দায়িত্বে থাকা শামীমার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্বামী আমাকে শিখিয়ে দিয়েছেন- জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, সর্দির জন্য হিস্টাসিন, অ্যান্টাসিড গ্যাসের জন্য ও গর্ভবতী মায়েদের ক্যালসিয়ামের ওষুধ দিতে হয়। সে অনুযায়ী ক্লিনিকে আসা মানুষদের আমি ওষুধ দিচ্ছি। আমি ডিগ্রি পাস করেছি, আমার স্বামীর শিখিয়ে দেওয়া পদ্ধতি অনুযায়ী ওষুধ ও রোগ সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে। তাই কোনো সমস্যা হয়না।
ওষুধ কিংবা চিকিৎসা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানিক কোন ডিগ্রি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ডিগ্রি পাশ করেছি। ভালো জ্ঞান আছে ওষুধ ও রোগ সম্পর্কে। ডিগ্রি পাশ এমনি এমনি হয়না।
সে সময় প্রতিবেদকের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট দেখতে চান শামীমা সুবর্ণা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রত্নাই কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপির দায়িত্বে থাকা আব্দুস সালাম প্রায়ই তার স্ত্রীকে ক্লিনিকে বসিয়ে চলে যান বাইরে। আর বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা এলাকার লোকজনকে ওষুধ প্রদান করেন তার স্ত্রী।
জানতে চাইলে ক্লিনিকের সিএইচসিপি আব্দুস সালাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ব্যক্তিগত কাজে একটু বাইরে এসেছিলাম। তাই স্ত্রীকে বসিয়ে দিয়েছিলাম ক্লিনিকে।
এটা আপনি করতে পারেন কিনা প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা বেসরকারি ক্লিনিক, সরকারি চাকরি না। এটাতে তেমন কোন সমস্যা হবে না।
ক্লিনিকে ওষুধ প্রদানের রেজিস্ট্রারে লক্ষ্য করা গেছে, আগে থেকেই স্থানীয় কয়েকজনের নাম লেখা রয়েছে। তাদের কি ওষুধ প্রদান করা হয়েছে, কোন সময় প্রদান করা হয়েছে, ওষুধ কতজন নিয়েছেন তার ঘরগুলো ফাঁকা রয়েছে। তবে দায়িত্বে থাকা স্ত্রী জানান, এসব ঘর তার স্বামী এসে পূরণ করবেন।
এমন অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমাস জানান, সঠিক রোগ নির্ধারণ না করে ওষুধ প্রয়োগের ফলে কঠিন সমস্যা তৈরি হতে পারে। এতে মৃত্যু ঝুঁকিও রয়েছে। তাছাড়া কর্মস্থলে স্বামীর পরিবর্তে স্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। আমি বিয়ষটি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইনচার্জ বলবো।
দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার নির্দেশনায় ওই ক্লিনিকের সিএইচসিপিকে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলা হবে। এর জবাব গ্রহণযোগ্য না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।