বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় শিশু মাহি উম্মে তাবাসসুমকে গণধর্ষণের পর হত্যার দায়ে চার যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনাল-২ এর বিচারক নুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামী ও বাদী পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পিপি আশেকুর রহমান।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বগুড়ার ধুনট উপজেলার নছরতপুর গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে বাপ্পী আহম্মেদ, দলিল উদ্দিনের ছেলে কামাল পাশা, ছানোয়ার হোসেনের ছেলে শামিম রেজা ও মৃত সাহেব আলীর ছেলে লাভলু শেখ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার ধুনট থানার নশরতপুর গ্রামের ৭ বছরের শিশু কন্যা মাহি উম্মে তাবাসসুমের বাবা-মা গার্মেন্টস কর্মি হওয়ায় ঢাকায় বসবাস করতেন। তাবাসসুম তার দাদা আবদুস সবুরের বাড়িতে থেকে পাঁচথুপি-নশরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো। ২০২০ সালে ১৪ ডিসেম্বর রাতে তাবাসসুম তার দাদা ও ফুফুর সঙ্গে নশরতপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে ওয়াজ মাহফিলে শুনতে যায়। রাত ১০ টার দিকে তাবাসসুম ঐ স্থানে বসা ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে মিষ্টি কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে রাত দেড়টায় ঐ গ্রামের একটি বাঁশ ঝাড়ে তাবাসসুমের লাশ পাওয়া যায়। পরদিন তাবাসসুমের বাবা বেলাল হোসেন বাদী হয়ে ধুনট থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তকালে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে শিশু তাবাসসুমকে গণধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করেন। ধুনট থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হক মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালে ২৫ নভেম্বর আদালতে ৪ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -২ এর স্পেশাল পিপি আশেকুর রহমান বলেন, বিচারক রায়-এ আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকরের আদেশ ছাড়াও প্রত্যেকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করায় বাদীপক্ষ খুশি। তবে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে আসামিপক্ষের আইনজীবী।