ভারতের মত পাকিস্তানও মুখ থুবড়ে পড়ল, চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

ব্যাট-বলের উত্তেজনা-রোমাঞ্চ ছড়ানো টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ। শেষ হাসিটা হাসল ইংল্যান্ডই। দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নিল টি-টুয়েন্টির বিশ্ব আসরের শিরোপা।

পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ইংলিশরা এখন ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি দুই ফরম্যাটেরই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন।

মেলবোর্নে ফাইনালের মঞ্চে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান ৮ উইকেটে ১৩৭ রান তোলে। জবাবে জশ বাটলারের ইংল্যান্ড ৬ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

রোববার ১৩৮ রানের সহজ লক্ষ্যে নেমে অবশ্য শুরুতে ইংলিশদের জন্য সহজ ছিল না। প্রথম ওভারেই এক রান করা অ্যালেক্স হেলসকে বোল্ড করেন শাহিন আফ্রিদি। সাত রানে হয় প্রথম উইকেটের পতন। দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে রান বিলান নাসিম শাহ, দিয়ে ফেলেন ১৪ রান।

হারিস রউফ চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে পান ২ চারে ১০ রান করা ফিল সল্টের উইকেট। মিড উইকেটে ইফতিখার ক্যাচ নেন।

পাওয়ার প্লেতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ৪৯ রান তুললেও ইংলিশরা হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। ষষ্ঠ ওভারে রউফের সুইংয়ে পরাস্ত হন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা বাটলার। ১৭ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২৬ রান করা অধিনায়কের ব্যাটে লেগে বল রিজওয়ানের গ্লাভসবন্দি হয়। জমে ওঠার আভাস মেলে ফাইনাল মহারণে।

চতুর্থ উইকেটে ধাক্কা সামাল দেন বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক। একাদশ ওভারে রান আউট থেকে রক্ষা পান ব্রুক। বাজে থ্রোতে নিতে হয়নি বিদায়। ব্রুক অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেননি। এক চারে ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন। লং অফে দারুণ ক্যাচ নেন আফ্রিদি, ভাঙে ৩৯ রানের জুটি। ক্যাচ নেয়ার সময় ডান পায়ে টান লাগায় আফ্রিদি মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন।

১৪তম ওভারে রান আউটের হাত থেকে রক্ষা পান স্টোকসও। নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে দৌড়ে রান নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন, মঈন আলী আগ্রহী না হওয়ায় ফেরত যাওয়ার পথে পড়ে গিয়ে আবার উঠে দৌড়ান স্টোকস। ফিল্ডারের থ্রো এবারও স্টাম্পে লাগেনি।

১২ থেকে ১৪- এই ৩ ওভারের মধ্যে ১০ রানের বেশি তুলতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষ ৩৬ বলে ৪৯ রানের জয়ের সমীকরণ এসে দাঁড়ায়।

মাঠে ফিরে আফ্রিদি ১৬তম ওভারে বল হাতে নেন। একটি মাত্র বল করার পর পায়ে আবারও সমস্যা অনুভব করেন। আর বল করতে পারেননি। তার ওভারের বাকি বলগুলো করেন ইফতিখার। ওই ওভারের পঞ্চম বলে চার ও শেষ বলে ছক্কা মারেন স্টোকস। তাতে সমীকরণ দাঁড়ায় ২৪ বলে ২৮ রান।

ওয়াসিমের করা পরের ওভারের প্রথম দুই বল ও শেষ বলে চার মারেন মঈন। ওভারটিতে আসে ১৬ রান। তখন ইংলিশদের দরকার পড়ে ১৮ বলে ১২ রান। হারিস রউফ ১৮ নম্বর ওভারে ৫ রান দেন। শেষ ১২ বলে প্রয়োজন পড়ে ৭ রান।

ওয়াসিম ১৯তম ওভারে ইয়র্কার ডেলিভারিতে ১৩ বলে ৩ চারে ১৯ রান করা মঈনকে বোল্ড করেন। পরে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে এক রান নিয়ে ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ৪৯ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৫২ রানে অপরাজিত থাকা স্টোকস।

পাকিস্তানের পক্ষে ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন রউফ। একটি করে উইকেট পান আফ্রিদি, শাদাব ও ওয়াসিম।

এর আগে বোর্ডে রান বাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টায় সফল হয়নি পাকিস্তান। স্যাম কারেন ও আদিল রশিদের বোলিংয়ের সামনে পারেনি সুবিধা করতে। বাবর আজমের দলের পুঁজি দেড়শ কাছেও যায়নি। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হতে ইংল্যান্ডের সামনে কেবল ১৩৮ রানের চ্যালেঞ্জই দিতে পারে দলটি।

Print Friendly

Related Posts