মেসিদের অপরাজেয় যাত্রা থামাল সৌদি আরব

২০১৯ সাল থেকে টানা ৩৬ ম্যাচে হারের মুখ না দেখা আর্জেন্টিনাকে প্রথম ম্যাচেই বড় ধাক্কা দিয়েছে সৌদি আরব। মেসিদের ২-১ গোলে হারিয়ে বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) লুসেইল স্টেডিয়ামে গ্রুপ ‘সি’র খেলার দ্বিতীয় মিনিটে লিওনেল মেসির ১২ গজ দূর থেকে নেয়া মাটি কামড়ানো শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন সৌদি গোলরক্ষক মোহামেদ আল-ওয়াইস।

গোল পেতে অবশ্য আর্জেন্টিনাকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। আকাশী-নীলরা প্রতিপক্ষ বক্সের কাছে পেয়েছিল সেট পিস। এসময় সৌদ আবদুলহামিদ আর্জেন্টিনার একজনকে ধাক্কা দিয়ে বসেন। ভিএআরের সহায়তা নিয়ে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিকে দশম মিনিটে মাটি গড়ানো শটে বল জালে জড়ান মেসি।

বিশ্বকাপে পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সমান ৭ গোল এখন মেসির। দুজনই পঞ্চমবারের মতো বিশ্বআসরে খেলতে কাতারে গিয়েছেন।

ম্যাচের ২১ মিনিটে আবারও বল জালে জড়িয়েছিলেন এলএম টেন। মাঝ মাঠ থেকে লম্বা শটে পাস দেন পাপু গোমেজ। বল নিয়ে মেসি গোলরক্ষককে পরাস্ত করেছিলেন। পরে ভিএআর জানিয়ে দেয় অফসাইডে ছিলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক, বাতিল হয় গোল।

এরপর গোল বাতিলের চক্রে ঘুরতে শুরু করে আর্জেন্টিনা। ছয় মিনিট পর আবারও অফসাইডে গোলবঞ্চিত হয় তারা। বল নিয়ে ক্ষিপ্রগতিতে ছুটে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন লৌতারো মার্টিনেজ। রেফারি ভিএআরের সহায়তা নিয়ে সেই গোলও বাতিল করে দেন।

মেসির বাড়িয়ে দেয়া বল নিয়ে মার্টিনেজ ৩৪ মিনিটে আবারও বল জালে পাঠিয়েছিলেন। লাইন্সম্যান অফসাইডের পতাকা তুলে দেন। টানা তিন গোল বাতিলের বেদনায় পোড়ে আর্জেন্টিনা।

বিরতির আগে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে চোটে মাঠ ছাড়েন সৌদি আরবের অধিনায়ক সালমান আল ফারাজ।

দ্বিতীয়ার্ধে দুবারের সাবেক চ্যাম্পিয়নদের চমকে দেয় সৌদি আরব। ৪৮ মিনিটে ফিরাস আল-বুরাইকান মাঝ মাঠে থেকে লম্বা শটে বল বক্সের কাছে পাঠান। সুযোগের সন্ধানে থাকা ফরোয়ার্ড সালেহ আল-শেহরি এক ডিফেন্ডারের দুই পায়ের ফাঁক গলে সৌদি আরবের প্রথম শট অন টার্গেট আনেন, সেটিই গোল। ম্যাচে আসে সমতা।

চমকের তখনও বাকি ছিল। ৫৩ মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে বাঁ-প্রান্তে থাকা মিডফিল্ডার সেলিম আল-দাসারি কাট করে দুবার ড্রিবলিং করেন। তারপর গোলরক্ষককে কাটিয়ে শরীর মোচড় দিয়ে ডান পায়ের চোখ ধাঁধানো শটে দ্বিতীয় গোলটি আনেন। লিড পায় সৌদি।

দশ মিনিট পর আর্জেন্টিনা গোলের ভালো সুযোগ পেয়েছিল। নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর বক্সের ভেতর থেকে নেয়া শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন সৌদি গোলরক্ষক আল-ওয়াইস। ৮৪ মিনিটে তিনি মেসির হেডও ঝাঁপিয়ে ঠেকান।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আলভারেজের নেয়া শট গোললাইন ঘেঁষে দাঁড়ানো আল আমরি হেডে ক্লিয়ার করে সৌদিকে বাঁচিয়ে দেন।

মিনিট তিনেক পর বক্সের ভেতর থেকে বল ফিস্ট করতে যান আল-ওয়াইস। এসময় সতীর্থ ইয়াসের আল-শাহরানির সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহত শাহরানির চিকিৎসা করতে মাঠে আসে মেডিকেল টিম। মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে তিনি মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন।

বেশ খানিকক্ষণ বন্ধ থাকার পর খেলা শুরু হয়। গোলের সুযোগ বানায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু জুলিয়ান আলভারেজের হেড দারুণভাবে আল-ওয়াইস লুফে নেন। যোগ করা সময়ে সমতা টানতে না পারায় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় লিওনেল স্কালোনির দলকে।

Print Friendly

Related Posts