করাচিতে টেস্টে জয় ছিল দৃষ্টিসীমাতেই। চতুর্থ দিন সকালে সেই পথটুকু পাড়ি দিতে ইংল্যান্ডের লাগল স্রেফ ৩৮ মিনিট। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে বেন ডাকেটের বাউন্ডারিতে ইংলিশরা পৌঁছে গেল জয়ের ঠিকানায়। এমন এক অর্জন তাদের ধরা দিল, যা করতে পারেনি টেস্ট ইতিহাসের আর কোনো দল। পাকিস্তানে গিয়ে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ!
পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারাল ইংল্যান্ড। বেন স্টোকসের দল তিন ম্যাচের সিরিজ জিতে নিল ৩-০তে।
সেই ১৯৫৫ সাল থেকে দেশের মাঠে টেস্ট খেলছে পাকিস্তান। কিন্তু নিজেদের আঙিনায় তারা হোয়াইটওয়াশ হলো এই প্রথম।
ইংল্যান্ড আছে ঠিক উল্টো প্রান্তে। একের পর এক গৌরবের কীর্তি গড়ে চলেছে এই দল। কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অধিনায়ক স্টোকস দায়িত্ব নেওয়ার পর ১০ টেস্টে ইংলিশদের নবম জয় এটি। অথচ এই দুজন দায়িত্ব নেওয়ার আগে ১৭ টেস্টে তাদের জয় ছিল স্রেফ ১টি।
ম্যাককালাম-স্টোকসের ইংল্যান্ডের কাছে জয়টাই শেষ কথা নয়, আগ্রাসী ক্রিকেটে তার বিপ্লব বয়ে এনেছেন টেস্ট ক্রিকেটে। সেই ছোঁয়া ছিল করাচিতেও। ম্যাচের ভাগ্য নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে তাদের প্রয়োজন ছিল স্রেফ ৫৫ রান। ৩৮ মিনিটেই সেই রান করে ফেলেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ডাকেট ও স্টোকস।
বিরুদ্ধ কন্ডিশনে দারুণ এই জয়ের পর নিজেদের পারফরম্যান্সকে ইংলিশ অধিনায়ক স্টোকস এক শব্দে বললেন, ‘পারফেক্ট।’
প্রথম ইনিংসে ১১১ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হ্যারি ব্রুক। ইংল্যান্ড টেস্ট দলের হয়ে প্রথম সফরেই তিন সেঞ্চুরিতে তার রান ৯৩.৬০ গড়ে ৪৬৮। পাকিস্তানে কোনো ইংলিশ ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড এটিই। সিরিজ সেরার স্বীকৃতিও মিলেছে ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের।
টেস্টে ফেরার সিরিজ বেন ডাকেট স্মরণীয় করে রেখেছেন ৭১.৪০ গড়ে সিরিজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫৭ রান করে।
পাকিস্তান এরপর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। আগামী সোমবার যা শুরু করাচিতেই। ইংল্যান্ড তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। ব্লুমফন্টেইনে যা শুরু হবে ২৭ জানুয়ারি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৩০৪
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৫৪
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ২১৬
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৬৭, আগের দিন ১১২/২) ২৮.১ ওভারে ১৭০/২ (ডাকেট ৮২*, স্টোকস ৩৫*; আবরার ১২-০-৭৮-২, নুমান ৫-০-৩৮-০, ৯১.-১-৪০-০, ফাহিম ২-০-১৩-০)।
ফল: ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ৩-০তে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: হ্যারি ব্রুক।
ম্যান অব দা সিরিজ: হ্যারি ব্রুক।