ইফতেখার শাহীন, বরগুনা: বরগুনা জেলার ৬ উপজেলায় সূর্যমুখীর আবাদ ও উৎপাদনের দিক থেকে অনেক এগিয়ে। কিন্তু এ মৌসূমে জেলার চাষিরা চাহিদা মতো বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সূর্যমুখী বীজ পাচ্ছেন না। কেজি প্রতি সূর্যমুখী বীজের মূল্য এখন ২ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা। ফলে বীজের দাম নাগালের বাইরে বলে কৃষকদের অভিযোগ। জেলায় সয়াবিন তেলের ঘাটতি মেটাতে ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে এবারে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি অফিস।
বরগুনা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৬ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ডাল ও তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৩৯ হাজার ১০০ কৃষককে বিনামূল্যে সার-বীজ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এসব ফসলের মধ্যে ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, বোরো ধান, বোরো হাইব্রিড, মুগডাল ও খেসারি ডাল রয়েছে।
সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের আজিজুর রহমান জানান, আমি ৪ হেক্টর অধিক জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাজারে উন্নত মানের ব্রাক কোম্পানির সূর্যমুখী বীজের সংকট দেখা দিয়েছে। যেটা পাওয়া যাচ্ছে তাও আবার চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে, এ মূল্য আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, এ বছর চাষিরা সূর্যমুখী চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। এ কারণে গত বছরের তুলনায় এবার সূর্যমুখী বীজের কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে এবার কৃষি বিভাগ চাষিদের সূর্যমুখী বীজ প্রণোদনা দিয়েছে। তাতে বীজের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। কৃষক পর্যায়ে কিছু বীজ মজুত আছে। দেশে প্রতি বছর ২৮ হাজার কোটি টাকার সায়াবিন তেল আমদানী করা হয়। যার কারনে তেলের আমদানী কমাতে সরকার চাষ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী তেলে আছে মানবদেহের জন্য উপকারী ওমেগা ৯, ওমেগা ৬ ও ফলিক অ্যাসিড। আরও আছে শতকরা ১০০ ভাগ উপকারী ফ্যাট কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও পানি। এই তেল সম্পূর্ণ ক্ষতিকর কোলেস্টেরলমুক্ত। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগীর জন্যও সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ।