৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে তীরে গিয়ে তরী ডুবেছিল বাংলাদেশের। জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেরে যেতে হয়েছে মাত্র ৩ রানে। তবে বাঁচা-মরার দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। শ্রীলংকাকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজে সমতা আনল টাইগাররা।
বুধবার (৬ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে লঙ্কানরা। দলের পক্ষে কুশল মেন্ডিস ২২ বলে ৩৬ ও কামিন্দু মেন্ডিস ২৭ বলে ৩৭ রান।
প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান করে শ্রীলংকা। জবাব দিতে নেমে অধিনায়ক শান্তর হাফ সেঞ্চুরিতে ১১ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
১৬৬ রানের জবাবে শুরু থেকেই আগ্রাসী খেলতে থাকেন লিটন ও সৌম্য। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তুলে নেন ৬৩ রান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস-দিলশান মাদুশঙ্কারা সুবিধা করতে পারছিলেন না এই দুজনের সামনে। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরই বলে আসেন শ্রীলংকার নতুন মালিঙ্গা মাথিশা পাথিরানা। এসেই সৌম্যকে ফিরিয়ে দেন তিনি। ২২ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই ওপেনার। সৌম্য আউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন দাসও। দলীয় ৮৩ রানের মাথায় এই পাথিরানার বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। শেষ হয় ২৪ বলে তার ৩৬ রানের ইনিংস।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ম্যাচের হাল ধরেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। শ্রীলংকার বোলারদের কোনোরকম সুযোগ না দিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত খেলা খেলতে থাকেন এই দুজন। শেষ পর্যন্ত দলকে জয়ের বন্দরে ভিড়িয়েই মাঠ ছাড়েন তারা। ছক্কা মেরে দলকে জয়ের বন্দরে নেন শান্ত। পূর্ণ হয় তার ফিফটিও। তার ৩৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৪টি চার ও ২ ছক্কায়। আরেক পাশে ২৫ বলে ২টি চার ও ১ ছক্কায় ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন হৃদয়।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬৫ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে শ্রীলংকা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুতেই লংকানদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই মেডেন আদায় করেন শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় ওভারেই আভিশকাকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন। প্রথম ৩ ওভারে ১ উইকেট হারানো লংকানদের রান ছিল মাত্র ৮। তবে পাওয়ার প্লের পরের ৩ ওভারে খেলা নিজেদের পক্ষে নিয়ে নেয় শ্রীলংকা। তাসকিন-মোস্তাফিজুর রহমানদের তুলোধুনো করে ৬ ওভার শেষে তাদের রানই পৌঁছায় ৪৯-এ।
৮ ওভার শেষে শ্রীলংকা তোলে ৬৪ রান। নবম ওভারের চতুর্থ বলে সৌম্য সরকারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন কুশল। তাতে ভাঙে ৪২ বলে ৬৬ রানের জুটি। ২২ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ রান করেন কুশল। পরের ওভারে রান আউট হয়ে যান দারুণ খেলতে থাকা কামিন্দুও। ২৭ বলে ৩টি চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ রান করেন তিনি। ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো লংকানদের রান দাঁড়ায় ৭৮-এ।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাদিরা সামারাবিক্রামাও। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে কট এন্ড বল হয়ে ফেরেন তিনি। তবে এই সময়ে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর মৃদু ঝড় বইয়ে দেন অধিনায়ক আসালঙ্কা। বিশেষ করে শেখ মেহেদী হাসানের করা ১৪তম ওভারে দুইটি ছক্কা মারেন তিনি। তবে ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১১২ রানের মাথায় সরাসরি বোল্ড হন ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ব্যাটার।
এরপর আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দাসুন শানাকা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ করে আসেন এই দুজন। ৩৭ বলে গড়েন অপরাজিত ৫৩ রানের জুটি। তাতে দলের রান ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫। ২১ বলে ৪টি চারে ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন ম্যাথিউস আর ১৮ বলে শানাকা অপরাজিত ছিলেন ২০ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকার। এর মধ্যে প্রথম তিন জনের ইকোনমিই ছিল নয়ের ওপর। ৪ ওভার বল করে কোনো উইকেট না পেলেও মাত্র ২০ রান দিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।