ভারতের লোকসভা নির্বাচনের বুথফেরত জরিপে পশ্চিমবঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বিজেপির উত্থানের আভাস দেওয়া হয়েছিল, ভোট গণনা শুরুর পর তারই প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছিল, তবে বেলা গড়ানোর পর আটকে রাখা শ্বাস ফেলার ফুরসৎ মিলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুর ২টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এ রাজ্যের ৪২টি আসনে মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারে থাকা তৃণমূল এগিয়ে আছে ৩০টি আসনে। আর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এগিয়ে আছে ১১টি আসনে। অন্য একটি আসন পেয়েছে কংগ্রেস।
অথচ সকাল ৮টায় গণনা শুরুর পর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে বিজেপির এগিয়ে যাওয়ার খবর দিচ্ছিল আনন্দবাজার। তখন তৃণমূল ১০ আসনে এবং বিজেপি ১৩ আসনে এগিয়ে ছিল।
তবে ঘণ্টা তিনেক পর তৃণমূলের এগিয়ে থাকার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসনে এবার প্রার্থী হয়েছিলেন ৫০৭ জন।
পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে ২০১৯ সালের নির্বাচনে তৃণমূল ২২টি এবং বিজেপি ১৮টি আসন পায়। এবারের নির্বাচনে মমতার রাজ্যে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে নানাভাবে চেষ্টা করেছে মোদির বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূলও নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে মরিয়া।
পুরো বাংলায় প্রচারণার সময় নরেন্দ্র মোদি এবং অন্যান্য বিজেপি নেতারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের দিকেই নজর রেখেছিলেন। বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি, কয়লা ও গবাদি পশু পাচারের অভিযোগ তুলে দলের কয়েকজন নেতা কারাগারে থাকার ব্যাপারগুলো নিজেদের প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করেছিল।
সাত ধাপের ভোটের শেষ ধাপে শনিবার পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। অন্তত পাঁচটি সংস্থার বুথফেরত জরিপে বলা হয়, এ রাজ্যে বিজেপির কাছে ২ থেকে ৭টি আসন হারাতে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির নেতাকর্মীরা। এক্সিট পোলের ফলাফলকে মমতার জনপ্রিয়তা কমার ‘প্রমাণ’ হিসেবে দেখাচ্ছিলেন কেউ কেউ।
অবশ্য তাতে মমতার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি। বুথফেরত জরিপের আভাস আমলে নিচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমরা দেখেছি ২০১৬, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে কীভাবে এক্সিট পোল করা হয়েছিল। কোনো ভবিষ্যদ্বাণীই সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি। সংবাদমাধ্যমের খোরাক হিসেবে দুই মাস আগে কিছু মানুষ ঘরে বসে তৈরি করেছে এসব কেন্দ্রফেরত জরিপ। এগুলোর কোনো মূল্য নেই।”
বাম এবং কংগ্রেস জোটের সঙ্গে যারা নির্বাচনে গিয়েছিলেন, তারা ২০১৯ সালের চেয়ে খারাপ অবস্থানে নির্বাচন শেষ করলেন।