মাধ্যমিকে পাঠদান পদ্ধতিতে থাকবে সায়েন্স-আর্টস-কমার্স


জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২, নতুন পুস্তক মুদ্রণ ও চলমান মূল্যায়ন পদ্ধতি সংক্রান্ত জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, যতদূর সম্ভব মূল্যায়ন পদ্ধতি পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর মতো হবে।একইসঙ্গে মাধ্যমিকে ফিরছে সায়েন্স-আর্টস-কমার্স বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা)।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ এর বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা তথা অংশীজনদের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকগণের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি নানাবিধ বাস্তব সমস্যা বিদ্যমান থাকায় উক্ত শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় মর্মে প্রতীয়মান।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক বিবেচনায় নির্দেশনা প্রদান করা হলো:

ক) প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের সাথে ধারাবাহিকতা রেখে ইতোমধ্যে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে মুদ্রণ করা হবে।

এক্ষেত্রে পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ণ প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে। যতদূর সম্ভব মূল্যায়ন পদ্ধতি পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর মতো হবে।

খ) ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে চলমান পাঠ্যপুস্তকগুলো ২০২৪ সাল ব্যাপী বহাল থাকবে। ২০২৫ সালে যথাসম্ভব সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হবে।

গ) ২০২৪ সালের অবশিষ্ট সময়ে ও বার্ষিক পরীক্ষায় ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদেরকে সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে। উল্লেখ্য, শ্রেণি কার্যক্রমসমূহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির প্রতিটির ৬টি করে বিষয়ভিত্তিক যে মূল্যায়ন কার্যক্রম অসম্পন্ন রয়েছে সেগুলো আর অনুষ্ঠিত হবে না। সংশোধিত ও পরিমার্জনকৃত মূল্যায়ন রূপরেখার ভিত্তিতে ডিসেম্বর নাগাদ ২০২৪ সালের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতির রূপরেখা শিগগিরই বিদ্যালয়সমূহে প্রেরণ করা হবে।

ঘ) ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (২০২৬ সালের অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষা) নেওয়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রেখে পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকসমূহ (অর্থাৎ ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত পুস্তক) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে প্রণীত শাখা-বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক এই পাঠ্যপুস্তকসমূহের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচিটি সম্পন্ন করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে পরিচালিত হবে।

৫) যে সকল শিক্ষার্থী ২০২৫ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে তাদেরকে জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর আলোকে প্রণীত শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকসমূহ (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) প্রদান করা হবে। এ সকল শিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলে দুই শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি শেষে ২০২৭ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

চ) শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, প্যাডাগগ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিগণের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে, যা ২০২৬ সাল থেকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts