চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে চিটাগংয়ের শুরু

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। মিরপুরে শনিবার ২০ ওভারে ৯৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল রংপুর, চিটাগং জিতেছে শেষ ওভারের প্রথম বলে।

ফেভারিটদের হারিয়ে চিটাগংয়ের এই জয়ের নায়ক বিপিএলে অভিষিক্ত রবি ফ্রাইলিঙ্ক। নতুন বলে তিন উইকেটে তিনিই গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন রংপুরের টপ অর্ডার। পরে ফিরে উইকেট নেন আরও একটি। দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার পরে ব্যাটিংয়েও শেষ দিকে ঠাণ্ডা মাথায় দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের ঠিকানায়।

চিটাগংয়ের জয়ের শুরু টস দিয়েই। সংসদ সদস্য হওয়ার পর প্রথম ম্যাচটি মাশরাফি বিন মুর্তজার জন্য ছিল আরেকটি মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচ। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে পেলেন একশ টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বাদ। তবে হতাশ হন টসে। চিটাগং অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম টসে জিতে রংপুরকে পাঠান ব্যাটিংয়ে।

রংপুরের স্কোয়াডের সবচেয়ে বড় দুই নাম এ দিন ছিল না একাদশে। এবি ডি ভিলিয়ার্স দলে যোগ দেবেন পরের দিকে। ক্রিস গেইলও ঢাকা এসে পৌঁছেছেন ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে। তবে এই দুজন না থাকলেও রংপুরের ব্যাটিং শক্তি কম ছিল না। কিন্তু হতাশ করেছেন রবি বোপারা ছাড়া সবাই।

সেই হতাশার শুরু অ্যালেক্স হেলসকে দিয়ে। বিপিএল অভিষেকে নিজের প্রথম বলেই আউট হয়েছেন আগ্রাসী ইংলিশ ওপেনার। ম্যাচের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই হেলসকে ফিরিয়েছেন ফ্রাইলিঙ্ক। ওই ওভারেই এই পেসারের ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড মোহাম্মদ মিঠুন।

দারুণ ড্রাইভে চার মেরে শুরু করা রাইলি রুশোকে ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ চৌধুরী। ফ্রাইলিঙ্কের পরের ওভারে আউট মেহেদি মারুফ। চার ওভারেই নেই রংপুরে চার উইকেট!

পেসের পর চিটাগংয়ের স্পিনেও ধুঁকেছে রংপুর। অফ স্পিনার নাঈম হাসান ফিরিয়ে দেন বেনি হাওয়েল ও ফরহাদ রেজাকে। এক পর্যায়ে ৩৫ রানে রংপুর হারায় ৭ উইকেট।

সেখান থেকে দলকে টেনে নেন বোপারা ও সোহাগ গাজী। অষ্টম উইকেটে দুজন যোগ করেন ৪৯ রান। ১৭ বলে ২১ রান করে আউট হয়ে যান সোহাগ। শেষ ওভারে আউট হওয়া বোপারা ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ করেছেন ৪৭ বলে। এই দুজনের সৌজন্যে রংপুরের রান পৌঁছায় একশর কাছে।

৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ফ্রাইলিঙ্কের উইকেট ৪টি, মাত্র ১০ রান দিয়ে নাঈমের শিকার দুটি।

রান তাড়ায় চিটাগংয়ের ইনিংসও খুব একটা গতি পায়নি কখনও। তবে রান রেটের তাড়া ছিল না বলে খুব বেশি চাপে পড়তে হয়নি তাদের।

সোহাগ গাজীকে দারুণ ছক্কায় শুরু করলেও ওপেনার ক্যামেরন দেলপোর্তকে ৮ রানেই থামান মাশরাফি। স্পট ফিক্সিংয়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিপিএলে ফেরার ম্যাচে মোহাম্মদ আশরাফুল সুযোগ পেয়েছিলেন তিনে। কিন্তু ৫ বলে ৩ রানে আউট হয়েছেন শফিউল ইসলামের বলে বাজে শটে।

মোহাম্মদ শাহজাদ ছিলেন বলে চাপ চেপে বসেনি ততটা। আফগান ওপেনার ২৩ বলে করেছেন ২৭ রান, ছোটো রানের ম্যাচে যা ছিল গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

মিডল অর্ডারে সিকান্দার রাজা, মোসাদ্দেক হোসেনরা টিকতে পারেননি। তবে এক প্রান্ত আগলে দলকে এগিয়ে নেন মুশফিক।

দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে মাশরাফি বোল্ড করে দেন নাঈম হাসানকে। এরপর মুশফিক ২৫ রান করে নাজমুল অপুর শিকার হলে ম্যাচে খানিকটা উত্তেজনা ফিরেছিল। ফ্রাইলিঙ্ক পরিস্থিতি সামলেছেন ঠাণ্ডা মাথায়।

শুরুর উইকেটের পর ম্যাচের শেষটায় ফ্রাইলিঙ্ক রাখলেন ছাপ। শেষ ওভারের প্রথম বলে তার বাউন্ডারিতেই চিটাগং পেয়েছে জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ৯৮ (মারুফ ১, হেলস ০, মিঠুন ০, রুশো ৭, বোপারা ৪৪, হাওয়েল ৮, ফরহাদ ৩, মাশরাফি ২, সোহাগ ২১, নাজমুল ৪, শফিউল ১*; আবু জায়েদ ৪-০-৩০-২, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-০-১৪-৪, খালেদ ৪-০-১৫-১, নাঈম ৪-০-১০-২, সানজামুল ৪-১-২৭-০)।

চিটাগং ভাইকিংস: ১৯.১ ওভারে ১০১/৭ (শাহজাদ ২৭, দেলপোর্ত ৮, আশরাফুল ৩, মুশফিক ২৫, রাজা ৩, মোসাদ্দেক ২, নাঈম ১০, ফ্রাইলিঙ্ক ১২*, সানজামুল ৭*; মাশরাফি ৪-০-২৪-২, সোহাগ ৩-০-১৮-০, শফিউল ২.১-০-১৯-১, নাজমুল ৪-০-১৭-১, হাওয়েল ৪-০-১৩-১, ফরহাদ ২-০-১০-১)।

ফল: চিটাগং ভাইকিংস ৩ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রবি ফ্রাইলিঙ্ক

Print Friendly

Related Posts