মাদকবিরোধী অভিযানে কাউন্সিলরসহ নিহত ৯

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে বিভিন্ন জেলায় র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আরও অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতে নিহত এই ব্যক্তিদের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফের একজন পৌর কাউন্সিলরও রয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, চাঁদপুর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ ও নোয়াখালীতে নিহত হয়েছেন বাকি আটজন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানে নামার পর গত ১৯ মে রাত থেকে এ কয়দিনে অন্তত ৭৭ জন নিহত হলেন।

নিহতরা সবাই মাদক কেনা-বেচায় জড়িত বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তবে তাদের বক্তব্য ও ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

কক্সবাজার: টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নোয়াখালিয়াপাড়া এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে নিহত হন টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুল হক (৪৬)। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় একরামের নাম রয়েছে বলে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম: রাত ১টার দিকে সীতাকুণ্ডে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে রায়হান উদ্দিন (২৮) নামে একজন নিহত হন। তার বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি ও মাদকের সাতটি মামলা রয়েছে বলে সীতাকুণ্ড থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হাসান জানিয়েছেন।

রায়হানের তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, পাঁচ হাজার ইয়াবা, ২০ রাউন্ড গুলি ও দুটি ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত রায়হানের বাড়ি সীতাকুণ্ডের গোলবাড়িয়া এলাকায় বলে জানান ওসি।

চাঁদপুর: ভোররাতে মতলব দক্ষিণে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সেলিম (৩৭) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সাতটি মাদক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহত সেলিম মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী ইউনিয়নের সালামত উল্যাহর ছেলে।

ঝিনাইদহ:  শৈলকুপায় রফিকুল ইসলাম লিটন ( ৪০ ) নামে একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। পুলিশের দাবি, তিনি চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা। রাত ১টার দিকে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের পাশে শৈলকুপা উপজেলার বড়দাহ জামতলা এলাকায় লিটনের লাশ পাওয়া যায় বলে শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন। লিটন শৈলকুপা উপজেলার  শেখপাড়া গ্রামের হাকিম মোল্লার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১০টি মাদকের মামলাসহ ১২টি মামলা আছে বলে ওসি জানান।

 

ময়মনসিংহ: গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক যুবক নিহত হয়েছেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান বলেন, রাত দেড়টার দিকে নগরীর মরাখলা এলাকায় মাদক বিক্রেতারা মাদক ভাগাভাগি করছে বলে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়।পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে মাদক বিক্রেতারা পিছু হটলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে পাওয়া যায়।

নোয়াখালী: সোনাইমুড়ি উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন হাসান নামে এক ব্যক্তি। বানুয়াই গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে হাসানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক কেনা-বেচাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২১টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। ভোররাতে বগাদিয়া ইস্তেমা মাঠ এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হাসান মারা যান বলে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।

খুলনা: দিঘলিয়া উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে আবুল কালাম মোল্লা (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। কালামের বিরুদ্ধে পাঁচটি মাদক মামলা রয়েছে বলে খুলনার পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ জানান। তার বাড়ি যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা গ্রামে।

কুষ্টিয়া: সদর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হালিম মণ্ডল (৩৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, শহরের হাউজিং ডি ব্লক মাঠে রাত দেড়টার দিকে এ গোলাগুলির ঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তি সদর উপজলার বড়িয়া গ্রামের সেলিম মণ্ডলের ছেলে। হালিম পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বলে এ পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য।

বাগেরহাট: চিতলমারী উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন মিটুল বিশ্বাস (৪৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের চিংগুড়ি গ্রামের খোকা বিশ্বাসের ছেলে। মিটুলের বিরুদ্ধে নয়টি মাদক, একটি হত্যা, তিনটি পুলিশের ওপর হামলার মামলাসহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে বলে চিতলমারী থানার ওসি অনুকুল চন্দ্র সরকার জানান।

ওসি বলেন, চিতলমারী উপজেলার কুনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শনিবার রাতে মিটুলকে আটক করা হয়।

Print Friendly

Related Posts