মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে আরও ১১ জন নিহত

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে আরও ১১ জন নিহত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে নয় জেলায় মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে তাদের বন্দুকযুদ্ধ হয়।

এর মধ্যে পুলিশের গুলিতে কুমিল্লা ও নীলফামারীতে দুইজন করে মোট চারজন এবং চুয়াডাঙ্গা, নেত্রকোণা ও দিনাজপুরে একজন করে তিনজন নিহত হয়েছেন। আর র‌্যাবের গুলিতে চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জে নিহত হয়েছেন চারজন।

পুলিশ ও র‌্যাবের দাবি, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধে গত চার দিনেই অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

কুমিল্লা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও থানা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শরীফ (২৬) ও পিয়ার (২৮) নামে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতরা তালিকাভুক্ত শীর্ষ দুই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে পুলিশ। সোমবার রাত পৌনে একটার দিকে জেলা সদরের অদূরে বিবিরবাজার অরণ্যপুর এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি রিভলবার, একটি পাজেরো জিপ, ৫০ কেজি গাঁজা এবং ৫০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযানকালে কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রূপকুমারসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া।

নীলফামারীর সৈয়দপুরে সোমবার রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের ককটেলের আঘাতে ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, দেশীয় অস্ত্র , ইয়াবা এবং একটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- সৈয়দপুর পৌর শহরের ইসলামবাগ মহল্লার আব্দুল হান্নানের ছেলে মো. জনি হোসেন (২৭) ও নিচু কলোনী মহল্লার ইউসুফ হোসেনে ছেলে শাহিন আহমেদ (৩০)।

চট্টগ্রাম নগরের বায়োজিদ থানার ডেবারপাড় এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শুক্কুর আলী (৪৩) নামে এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পুলিশের সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে কামরুজ্জামান সাধু নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সোমবার রাত ২টার দিকে শহরের রেলস্টেশনের পেছনে এ বন্ধুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি ও ১ বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

আলমডাঙ্গা থানার ওসি আবু জিহাদ খান জানান, নিহত কামরুজ্জামান সাধু থানার তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে থানায় ৬টি মাদক মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তার ৩ বছরের সাজা হয়েছে।

নেত্রকোণায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মঙ্গলবার ভোরে আমজাদ নামে এক অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এ সময় সদর থানার ওসিসহ আরও ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, আমজাদ একজন ভাড়াটে খুনি ও অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে থানায় ১৩টি বিভিন্ন মামলা রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় মঙ্গলবার ভোরে র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বাচ্চু খান (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এসময় র‍্যাব তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ধন মিয়া (৩৫) নামে এক মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার সোনারামপুর এলাকায় র‌্যাব-১০ এর সদস্যদের সঙ্গে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ধন মিয়ার বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এ ঘটনায় ধন মিয়ার স্ত্রী আরজিনা বেগমকে আটক করা হয়েছে।

দিনাজপুরের বিরামপুরেও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. প্রবল হোসেন (৩৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার ভোরে বিরামপুর থানার এক দল পুলিশ পৌরসভার মনিরামপুর মাঠে টহল দিচ্ছিল। ওই সময় ১০-১২ জন মাদক ব্যবসায়ী তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে মাদক ব্যবসায়ী মো. প্রবল হোসেন নিহত হয় ও বাকি মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। নিহত প্রবল হোসেন একাধিক মামলা আসামি। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৫টি ককটেল এবং ৯২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts