মাদকবিরোধী অভিযান : দুইদিনে ‘বন্দুকযদ্ধে’ নিহত ১৪

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ সারাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে দুইদিনে ‘বন্দুকযদ্ধে ১৪জন নিহত হয়েছে। রোববার রাতে ’ছয় জেলায় ‘বন্দুকযদ্ধে’ আটজন নিহত হয়েছেন। টাঙ্গাইল, রাজশাহী, ঝিনাইদহ ও নরসিংদীতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন ও চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত হয়েছেন। যশোরে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে তিন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় নিহতের বেশির ভাগই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করছে র‌্যাব ও পুলিশ। গত শনিবার রাতেও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ছয় জেলায় ৬ জন নিহত হন। ময়মনসিংহ, ফেনী, বরিশাল, যশোর, দিনাজপুর ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এসব ঘটনা ঘটে। এসব ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত চারজন মাদক ব্যবসায়ী, একজন ডাকাত ও অপর একজনকে ছিনতাইকারী বলে দাবি করে পুলিশ।

রোববার রাতে ছয় জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় আমাদের জেলা  ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

যশোরে রোববার রাতে দু’টি স্থান থেকে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন শার্শা উপজেলার মইশাকুড়া গ্রামের আমিনুর রহমানের ছেলে মুন্না। তবে অপর দুইজনের পরিচয় জানা যায়নি। নিহতরা মাদক ব্যবসায়ী দাবি করে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, রোববার রাত সাড়ে তিনটার দিকে যশোর শহরতলীর শেখহাটি ও খোলাডাঙ্গায় মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করছে-এমন সংবাদ পায় পুলিশ। খবর পেয়ে পুলিশ ওই স্থান দুটিতে যায়। এসময় শেখহাটির নওয়াব আলীর খেজুর বাগান নামক স্থান থেকে দুইটি মৃতদেহ ও ৪শ’ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। একইসাথে খোলাডাঙ্গা মাঠের মধ্যে থেকে একটি মরদেহ ও একশ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তল ও গুলির খোসা পাওয়ার কথাও জানান তিনি।

রাজশাহীতে নিহত ব্যক্তির নাম লিয়াকত শিকদার (৪৫)। তিনি পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের নামাজগ্রামের জাক্কার মন্ডলের ছেলে ও স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে র‌্যাবের একটি দল পুঠিয়ার বেলপুুুকুরে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে মাদক ব্যবসায়ী লিয়াকত শিকদার আহত হন। পরে তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও গুলির খোসা এবং বিপুল পরিমাণে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

ঝিনাইদহে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ছব্দুল মন্ডল (৪৫) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। তার বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামে। তিনি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর স্কোয়াড কমান্ডার এ এস পি গোলাম মোর্শেদ জানান, রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে র‌্যাবের বিশেষ টহল দল কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাঠে চেকপোষ্ট বসিয়ে টহলে ছিল। এ সময় মাদকের চালান নিয়ে ছব্দুল মন্ডল ও তার সহযোগীরা মটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল। র‌্যাব সদস্যরা এ সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করলে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাদক ব্যবসায়ী ছব্দুল মন্ডল ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এসময় তিন র‌্যাব সদস্যও আহত হয় বলে জানান তিনি।

নরসিংদীর পলাশে রোববার রাতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত হয়েছেন। তবে তার নাম এখনও জানা যায়নি। র‌্যাব জানিয়েছে, তিনি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে পুলিশের সঙ্গে ‌‌‘বন্দুকযুদ্ধে’ জনাব আলী (৩২) নামে চিহ্নিত এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার রাত পৌনে একটার দিকে উপজেলার উথলী গ্রামের সন্যাসীতলা মাঠে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। তার নামে জীবননগর থানাসহ অন্যান্য থানায় অন্তত ১১টি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আবুল কালাম আজাদ (৪২) নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাব-১২ এর মাদকবিরোধী অভিযানের সময় গোলাগুলিতে তিনি মারা যান। নিহত আবুল কালাম আজাদ ঘাটাইল থানার পূর্ব পাকুটিয়ার আব্দুর রহমান খানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক সংক্রান্ত প্রায় ৬ টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় র‌্যাবের দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

Print Friendly

Related Posts