বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ কেউ মেসি মুখোশ পরে, কারও হাতে আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জাতীয় পতাকা। কেউ বা আবার ক্লাব ফুটবলের সমর্থক। তাই দোলাচ্ছেন বার্সেলোনার পতাকা।

চারশোর উপর ভক্ত হাজির হয়ে গিয়েছিলেন রাশিয়ায় আর্জেন্টিনার বেস ক্যাম্পে। তারাই বিশ্বকাপ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে মেসি ম্যানিয়া তৈরি করে দিলেন লেভ ইয়াশিনের দেশে। আর্জেন্টিনার দল অনুশীলন করছিল ব্রনিৎসি ট্রেনিং সেন্টারে। মস্কো থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত শহরে মেসিরা আসছেন শুনেই প্রবল উদ্দীপনা তৈরি হয়।

তার উপরে আর্জেন্টিনা ‘ওপেন ট্রেনিং সেশন’ করে দিয়েছিল। যার ফলে মেসিদের দেখার জন্য ভক্তদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাঠের বাইরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়নি, ভিতরেও ঢুকে পড়তে পেরেছিলেন তাঁরা। বিশ্বকাপের মতো সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায় রুদ্ধদ্বার অনুশীলনের রেওয়াজ বেশি থাকলেও ভক্তদের মনোরঞ্জনের কথা ভেবে মাঝেমধ্যে দরজা খুলে দিচ্ছে অনেক দল। যাতে তাদের দেশের সমর্থকেরা ট্রেনিংয়ের মাঠে এসে প্রিয় তারকাদের দেখতে পারেন, দলকে উৎসাহ দিতে পারেন।

কে জানত, সেটা করতে গিয়ে উল্টে চিন্তায় পড়ে যাবেন আর্জেন্টিনার কর্তারা। অনুশীলনে চারশো ভক্ত সারাক্ষণ জয়ধ্বনি দিয়ে গেলেন মেসির নামে। তাঁদের মধ্যে তরুণ-তরুণীই বেশি। রাশিয়ায় কয়েক দিন ধরেই আকাশের মুখ ভার ছিল। মেঘ আর বৃষ্টির পর ঝলমলে রোদ উঠেছিল মেসিরা অনুশীলন করার সময়। তাতে মেসি ম্যানিয়ার তীব্রতা আরওই বেড়ে যায়।

অনুশীলন শেষ হওয়ার মেসিকে নিয়ে উন্মাদনা আরও বেড়ে যায়। মাঠে হাজির ভক্তদের নিজস্বী এবং অটোগ্রাফের আবদার মেটানোর জন্য আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা দাঁড়িয়ে পড়েন। আবেদনে সাড়া দিতে দেখা যায় মেসিকেও। তিনি দাঁড়িয়ে পড়তেই হুড়মুড়িয়ে ছুটে আসেন সকলে। কয়েক জন আর্জেন্টিনীয় ভক্ত প্রিয় তারকার সই সংগ্রহ করতে পেরে আপ্লুত। তাঁরা বলতে থাকেন, ‘‘আমাদের জাতীয় দলকে দেখতে এসেছিলাম। ফুটবল ঈশ্বর আমাদের দেশের— লিয়োনেল মেসি। তাঁকে দেখতে এসেছিলাম। এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম বার আমাদের দলকে, আমাদের নায়ককে দেখলাম। দুর্দান্ত অনুভূতি।’’

বোঝাই যাচ্ছে, অধরা বিশ্বকাপ জয়ের অভিযানে মোটেও সমর্থনের অভাব হবে না মেসির। আগামী শনিবার প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি আইসল্যান্ড। অনুশীলন দেখতে আসা অনেক আর্জেন্টিনীয় ভক্তই বলে দিলেন, তাঁরা সে দিন মাঠ তো ভরিয়ে তুলবেনই, প্রত্যেক ম্যাচেই হাজির থাকার পরিকল্পনাও করছেন। মেসি ম্যানিয়ার ঢেউ গিয়ে পড়েছে সার্বিয়াতেও। সেখানে খুব জনপ্রিয় হয়েছে মেসি-ছাঁট। মাথার পিছন দিকে মেসির মুখ বসানোর জন্য ছুটছেন দলে-দলে ফুটবলভক্ত।