জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক সম্মান ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কলা ও মানবিকী অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাত ৮টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় ভ্রাম্যমান আদালতে তাদের বিচার চলছিলো।
সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তবে এই চক্রের মূল হোতা ক্যাম্পাসে আসলেও তাকে আটক করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। জালিয়াতি চক্রের আটককৃত দুই সদস্যই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্র্থ বর্ষের ছাত্র আশিক ই আতহার মেজবাহ এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র সাকিব উল সাদাত।
জানা যায়, রবিবার দিবাগত রাতে এক ভর্তিচ্ছুকে কলা ও মানবিকী অনুষদের প্রথম শিফটের (সকাল ৯টা) প্রশ্ন সরবরাহের প্রলোভন দেখায় ওই জালিয়াতি চক্রের এক সদস্য। বিনিময়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে তারা।
উল্লেখ্য, যে ভর্তিচ্ছুকে প্রলোভন দেখানো হয়েছিল সে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান নীলের আত্মীয়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই ভর্তিচ্ছুকে তিনি বলেন, “তোমাকে দিয়ে টোপ ফেলে প্রশ্নফাঁসকারীদের ধরবো।”
সোমবার সকালের দিকে ওই চক্র ক্যাম্পাসে আসলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীটিকে পাঠিয়ে দেয় তাদের সাথে। চক্রটির সাথে ওই ভর্তিচ্ছু প্রশ্নের জন্য গাড়িতে উঠতে গেলে তখন সেখানে ওতপেতে থাকা নীলসহ অন্য নেতাকর্মীরা গাড়ির ড্রাইভারসহ জালিয়াতি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। তবে জাকির ও জেসান নামের আরো দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তি ক্যাম্পাসে আসলেও তাদেরকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
আটককৃতদের কাছ থেকে জানা যায়, জালিয়াতি চক্রের প্রধান হচ্ছে এই দুই ব্যক্তি।
জালিয়াতির বিষয় স্বীকার করে আটককৃতরা বলেন, “আমরা কোন প্রশ্নপত্র আনিনি। জাকির ও জিসান আমাদেরকে হাতে লেখা প্রশ্নের সাজেশন্স পাঠিয়েছে।”
এসময় তাদের কাছ থেকে কয়েকটি সরকারী পরীক্ষার প্রবেশপত্রসহ ডাচ বাংলা ব্যাংকের ১৪ লাখ টাকার একটি চেক পাওয়া যায় বলে জানান প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, “আমরা সন্ধ্যায় তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে সপোর্দ করেছি। তাদের কাছে পাওয়া প্রশ্নের সাথে আমাদের প্রশ্নের কোন মিল পাওয়া যায় নি।”