খেলাধুলাই প্রজন্মকে সর্বনাশ থেকে রক্ষা করতে পারে: জাহাঙ্গীর আলম

মোকাম্মেল হক মিলন : ছোট বেলা থেকে খেলাধুলার প্রতি ঝোঁক ছিল, স্কুল পড়াশোনার সময় ফাঁকে ফাঁকে ফুটবল, কাবাডি, হা-ডু-ডুসহ নানান ধরনের ক্রিড়া’র সাথে জড়িয়ে পড়েন। আর বিভিন্ন ক্রিড়া প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে পুরস্কারের পাশাপাশি খেলায় নৈপুন্য দেখিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ক্রীড়াবিদ জাহাঙ্গীর আলম।

এভাবে হাটি-হাটি পা-পা করে খেলার জগত পেরিয়ে ক্রিড়াঙ্গনের কোচের দায়িত্ব পালন শেষে রেফারি বিষয়ে পাশ করে রেফারির দায়িত্ব পালন এবং নলিনীদাস বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শরীরচর্চা শিক্ষকের দায়িত্ব পালন ও খেলোয়াড়দের অনুশীলন করাতেন তিনি।

রেফারি বিষয়ে পাশ করার পর থেকে জাহাঙ্গীর আলম ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় ফুটবল মৌসুমে লিগে এবং প্রীতি ম্যাচসহ টুর্নামেন্ট পরিচালনা করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ভোলার সাত উপজেলার বাইরে বরিশাল, মেহেন্দিগঞ্জ, পটুয়াখালী, বাউফল এবং অতিসম্প্রতি পিরোজপুর জেলায় বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনা করে বর্তমান গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিমের কাছ থেকে বাহবা পেয়েছেন।

জাহাঙ্গীর আলমের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, ভোলা জেলায় খেলাধুলার জন্য পৃষ্ঠপোষক না থাকায় নিয়মিত ফুটবল টুর্নামেন্টসহ বিভিন্ন খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। পূর্বের ন্যায় হাবিব শীল্ড, জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ, এসপি গোল্ডকাপ, সাঈদ ফুটবল টুর্নামেন্টসহ লিগের খেলাগুলো চালু থাকলে ভোলার ক্রীড়াঙ্গন আরো উজ্জীবিত হতো এবং নতুন নতুন খেলোয়াড় তৈরী হতো। তিনি প্রতিটি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা পর্যায়ে সকল প্রকার খেলাধুলা চালু রেখে বর্তমান প্রজন্মকে বিপথগামী পথ থেকে রক্ষা করা যেত।

জাহাঙ্গীর আলম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, ভোলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি হামিদুল হক বাহালুল মোল্লা, ভোলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইয়ারুল আলম লিটন, জেলা ক্রীড়া অফিসারসহ সকল কর্তৃপক্ষের নিকট ফুটবল টুর্নামেন্ট ও লীগ এবং ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলো চালু করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

অতি সম্প্রতি ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে ভোলার ক্রীড়াঙ্গনে যেন প্রাণ ফিরে এসেছিল। এতে করে ভোলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদরাসার খেলোয়াড়গণ ও ক্রীড়ামোদিরা উপস্থিত হয়ে খেলার মাঠকে উজ্জীবিত করেছিল। তবে খেলাধুলার মাঠে প্রত্যেক দর্শক ও খেলোয়ারগণ শৃঙ্খলা বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে খেলা শেষ করেছেন। এটাই মাঠের খেলাধুলার বড় শর্ত।

ইদানিং বিভিন্ন পাড়ায় ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করে খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল দর্শক-খেলোয়াড় রেফারী ও কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরণ করছে, যা মোটেও কাম্য নয়। কোন কোন খেলোয়াড় খেলা পরিচালনাকারী ও রেফারি লাইসম্যানদের সাথেও ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের সামনে বিশৃঙ্খলা করেছেন। এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ব্যর্থ হয়নি। বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে খেলা পরিচালনা করা কঠিন হবে।

এক সময়ের নাম করা খেলোয়ার গজনবী মিয়া, মেজর (অব:) হাফিস উদ্দিন, আদম আলী, খাদেম আলী, আবু তাহের আবু, ছোট্ট আবু, হাবিব, ছালেহ আহম্মদ, আমিনুল ইসলাম টুটুলসহ অসংখ্য খেলোয়ারগণ ভোলার ফুটবল অঙ্গনকে সুনাম কুড়িয়ে ভোলাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন। যা এখনও তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে ভোলাবাসী। সেইসব সুনামধন্য খেলোয়ারদের সুমান অক্ষুন্ন রাখতে আগামী প্রজন্মের জন্য বিশেষ করে ফুটবল টুর্নামেন্ট/ফুটবললীগ চালু করার দাবী জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম।

Print Friendly

Related Posts