বরিশালের মোকাম সামুদ্রিক ইলিশে সয়লাব

খান মাইনউদ্দিন,বরিশাল:  বরিশালে ইলিশের সবচেয়ে বড় বাজার (মোকাম) নগরীর পোর্ট রোড। প্রায় ৪ মাস পর ইলিশে ভরপুর এ মোকাম। তবে স্থানীয় ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর কোন ইলিশ নেই মোকামে। সবই সামুদ্রিক ইলিশ। দাম নাগালের মধ্যে হওয়ায় সন্তুষ্ট ক্রেতারাও।

মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, নিষেধাজ্ঞা কর্মসুচী সফল হওয়ায় ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। এ কারণেই কাঙ্খিত ইলিশ পাচ্ছে জেলেরা। আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস এই ৩ মাস ইলিশের প্রধান মৌসুম। গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ ধরতে সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলো বৈরি আবহাওয়ার কারনে মাঝপথ থেকেই ফিরে এসেছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাওয়া ট্রলারগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়েছে। ট্রলারগুলো মোকামে ফিরে আসায় চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। এছাড়া পটুয়াখালীর মহিপুর মোকাম থেকেও ট্রাকে ট্রাকে ইলিশ এসেছে বরিশালে। আগামী দিনে সমুদ্রে আরও ইলিশ আহরিত হবে বলে আশা করেন মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকদের ব্যস্ততা, ক্রেতাদের ভিড়, মহাজনদের হাসিমুখ। ঘাটে নোঙর করা ট্রলারগুলোর খোল ভরে আছে রুপালি ইলিশে। ট্রলারগুলোতে ছিল ১-২ কেজি সাইজের ইলিশ।

পোর্ট রোডের ইলিশ ব্যবসায়ি কাঞ্চন সাহা বলেন, কেবল ইলিশ মৌসুম শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে অনেক সামুদ্রিক ইলিশ এসেছে। সমুদ্রের ইলিশ গড়পরতা ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। আগামী দিনে সমুদ্র থেকে আরও ইলিশ আহরিত এবং দাম আরও কমবে বলে আশা করেন তিনি।

ইলিশ আড়তদার নাসির উদ্দিন বলেন, ৪ মাস পর বরিশাল মোকামে প্রথম অনেক ইলিশ এসেছে। আগে স্থানীয় বিভিন্ন নদ-নদীর ৪০ থেকে ৫০ মন ইলিশ আসতো মোকামে। গত দুই দিনে প্রায় ২ হাজার মণ ইলিশ এসেছে। সামনের দিনে ইলিশ আহরণ বাড়বে এবং দামও কমবে।

আড়তদার সজল দাস বলেন, সমুদ্রে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ায় জেলে, আড়দার ও মৎস্য শ্রমিক সবাই খুশী। বরিশাল মোকামে অনেক দিনের মাছের আকাল দূর হলো। চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো ইলিশে সয়লাব হয়েছে বরিশাল মোকাম। এভাবে মাছ ধরা পড়লে ইলিশ মাছ সর্বসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।

বরিশাল মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে জেলেদের জালে মাছ ধরা না পড়ায় কিছুটা চিন্তিত ছিলো মৎস্য বিভাগ। দেরিতে হলেও বরিশাল মোকামে ইলিশের খরা কেটেছে।

আগামী দিনগুলোতে সমুদ্রে এবং স্থানীয় নদ-নদীতে আরও ইলিশ আহরিত হবে এবং ইলিশের দামও কমবে বলে আশা করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts