পাকিস্তানি গোয়েন্দা শাখার গোপন নথি অবলম্বনে ‘ফাইল নম্বর ৬০৬’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দা শাখার গোপন নথি অবলম্বনে প্রথম ডকু-ফিকশন ফাইল নম্বর ৬০৬-এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে ।

আগামী ১১ এপ্রিল (বুধবার) বিকেল ৪টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে প্রদর্শনী হবে এই ডকু-ফিকশন।

১৯৪৮ সাল, মার্চ মাস। সদ্য জন্ম নেয়া রাষ্ট্রের ভাষা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। শেখ মুজিবুর রহমানের বয়স তখন ২৮ বছর। আলোচনার অংশ হিসেবে তার ওপর কড়া নজর রাখতে শুরু করে পাকিস্তানি গোয়েন্দারা। পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ প্রতিদিন প্রতিমুহূর্ত তার কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে থাকে এবং তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো রুটিন ওয়ার্ক হয়ে যায়। গোয়েন্দা বিভাগ এ সংক্রান্ত রিপোর্ট গুলো নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১৯৪৮ সালে ব্যক্তিগত ফাইল খোলে এবং তাতে সব তথ্য সংরক্ষণ করা শুরু করে। যা ব্যক্তিগত ফাইল বা পিএফ নামে পরিচিত।

 
কী আছে এই ‘ফাইল নম্বর ৬০৬’ ডকু ফিকশনে:

পাকিস্তান স্বাধীনতার মাত্র ৫ মাসের মাথায় ১৯৪৮ সালের ১৩ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকার বর্ধমান হাউসে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের সভায় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের কেন্দ্রিয় মন্ত্রী আইআই চুন্ডিগড়সহ আব্দুর রব নিশতার, পীরজাদা আব্দুস সাত্তার প্রমুখ। সভায় একটি পুস্তিকা বিলি করা হয়। এই পুস্তিকাটি শেখ মুজিবুর রহমান ও নাঈমুদ্দিন আহমদ প্রকাশিত। পুস্তিকাটির শিরোনাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ভাগা জনসাধারন কৈফিয়ত দিতে হবে আমাদের দাবি।’

এই পুস্তিকাকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো গোয়েন্দাদের খাতায় নাম ওঠে শেখ মুজিবুর রহমানের। এই নাম ওঠা পর্যন্তই শেষ হয়নি। অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনা সৃষ্টি করছিলেন শেষ মুজিবুর রহমান।

 
চলচ্চিত্রকার শেখ তাজুল ইসলাম তুহিনের কথা:
 
ফাইল নম্বর ৬০৬ সম্পর্কে পরিচালক প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন বলেন, ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইগুলোর প্রথম খণ্ড নিয়ে এই শর্ট ফিল্মটি বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাসের গবেষকদের গবেষণার তথ্য-উপাত্তের একটি সমৃদ্ধ উৎস হবে। কারণ এতে উন্মোচিত হয়েছে, কীভাবে সদ্য জন্ম নেয়া পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালিয়েছিল।
 
তিনি আরও বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি একান্তই ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা থাকায় নিজস্ব চেষ্টায় এবং সবার ব্যক্তিগত সহযোগিতায় ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ এর চৌদ্দ খণ্ডের মধ্যে প্রথম খণ্ডটি নিয়ে এই প্রথম একটি ডকু-ফিকশন নির্মাণ করেছি। ভবিষ্যতে সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে সবগুলো খণ্ডেররই ডকু-ফিকশন নির্মাণ করে বাংলাদেশে এবং বিশ্বের সবদেশে পৌঁছে দেব।’’
 
শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, গল্পকথক ও পেশাগতভাবে প্রকৌশলী। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পেশাগত জীবনে একজন প্রকৌশলী এবং প্রকৌশলীদের সর্বোচ্চ পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে দুবার এজিএস নির্বাচিত হন।

শেখ তাজুল ইসলাম তুহিনের বাবা শেখ রোকন উদ্দিন যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন এবং সেই সময় তিনিই প্রথম বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা করেন প্রথম গান ও কবিতা ‘তোরা আয় কে দেখবি খুশিতে নতুন চাঁদ আজ উদয় হইয়াছে …’।  শেখ তুহিনও বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় নির্মাণ করেন এই ডকু-ফিকশন।

 
ডকু-ফিকশন ফাইল নম্বর ৬০৬ এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন শাহীন আহমেদ এবং প্রযোজনায় ছিল ‘নক্ষত্র’।
 
ডকু-ফিকশনটির প্রদর্শনী উদ্বোধনীতে উপস্থিত থাকবেন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরবর্তীতে ইউটিউব ও অনলাইনে দেখা যাবে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে,  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখানো হবে।
somoy.tv
Print Friendly, PDF & Email

Related Posts