‘এই পদ্মা এই মেঘনা’— শিরোনামের গানের গীতিকার, সুরকার আবু জাফর মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গীতিকার আবু জাফরের মেয়ে জিয়ান ফারিয়া জানান, বেশকিছু দিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন সুরকার। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি এক মেয়ে ও তিন ছেলে রেখে গেছেন। বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন এ গীতিকারের প্রাক্তন স্ত্রী।
এ সুরকারের মরদেহ নেওয়া আজ হচ্ছে তার জন্মস্থান কুষ্টিয়ায়। বাদ আসর কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা হবে। গুণী এ মানুষটির প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন। কেবল সংগীতাচর্চাই নয়, তিনি একজন কবি ও সবার প্রিয় শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি সংগীতভুবন আলোকিত করেছেন জাফর। চুয়াডাঙ্গা কলেজ ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তার জন্ম কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চাঁদপুর ইউনিয়নের গড়ের বাড়ি কাঞ্চনপুর গ্রামে।
রাজশাহী-ঢাকা বেতার এবং টেলিভিশনের নিয়মিত সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ছিলেন আবু জাফর। তার রচিত দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গানগুলো তুমুল শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করেছিল। ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ আবু জাফরের সৃষ্টি। এই গান তাকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি গানের মধ্যে স্থান করে নেয় গানটি।
আবু জাফর সংগীত ক্যারিয়ারে অসংখ্য গান উপহার দেননি। তবে যা দিয়েছেন তাই কালজয়ী। ‘তোমরা ভুলেই গেছ মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে’, ‘আমি হেলেন কিংবা মমতাজকে দেখিনি’, ‘তুমি রাত আমি রাতজাগা পাখি’— গানগুলো এখনো সমান শ্রোতাপ্রিয়।