জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। মার্কেট গুলোতে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে জমজমাট কেনাবেচা। নামিদামি বিপণি বিতানের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকান গুলোতেও পুরোদমে চলছে বেচাকেনা। সাধ আর সাধ্যের সঙ্গে মিল রেখে আপনজনদের জন্য কেনাকাটা করছেন মানুষ। তবে এ বছর দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি ভারতের পোশাকগুলো দখল করে রেখেছে ঈদের বাজার।
ঝিনাইদহ শহরের জামান সুপার মার্কেট, বঙ্গবাজার, রফি টাওয়ার, মুিন্স সুপার মার্কেট, আজমিরি সুপার মার্কেট, সায়াদাতিয়া মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে তরুণ তরুণীদের ঈদের পোশাক কেনার ধুম পড়ে গেছে। প্রচন্ড গরম ও বৃষ্টি উপো করে নারী পুরুষসহ সব বয়সী ক্রেতারা পছন্দের পোশাক কিনতে ছুটছেন এ দোকান থেকে সে দোকানে।
ঝিনাইদহের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতীয় জলপরী, রাই কিশোরী, আনারকলি, আশিকি, মাসাককালি, কোয়েল, চিকনি চামেলি, বিপাশা, ডিসকো চালি, টাপুরটুপুরসহ নানা বাহারি নামের বিভিন্ন পোশাক দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। মান ভেদে এসব পোশাক তিন হাজার থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাকছেন দোকানিরা। পাশাপাশি দেশীয় তৈরি বিভিন্ন ব্রান্ডের পোশাকও বিক্রি হলেও তা তুলনামূলক কম।
মার্কেট গুলো ঘুরে দেখা গেছে, ঝিনাইদহের ঈদের বাজারে ভারতীয় শাড়ির দাপট অপ্রতিরোধ্য। সীমান্তবর্তী জেলা শহর হওয়ায় কিছুটা হলেও এর সহজ প্রাপ্যতা রয়েছে। গৃহিণী ও বধূরা ভারতের বিভিন্ন সিনেমা ও নায়িকার নামের শাড়ির দিকে ঝুঁকছেন বেশি। বিভিন্ন নামের পাথর আর চুমকির কারুকাজ করা গাঢ় রঙের এসব শাড়িতে বাজারের দোকানগুলো ভরে গেছে।
ভারতীয় এসব শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার শুরু করে ৩০/৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবারের ঈদ উপলে বাজারে নতুন এসেছে লেহেঙ্গা, ঝিলিক, জিপসি এবং স্যান্ডেলের মধ্যে এসেছে পোড়ামন, মালেকা সুন্দরি, ঝিলিক, মনপুরা, রূপসী বাংলাসহ হরেক রকমের ও ডিজাইনের জুতা স্যান্ডেল।
জামান সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী কওসার আলী সাংবাদিককে জানান, ‘এবার ঈদের পোশাকে দেশীয় ডিজাইনে বৈচিত্রতা থাকায় চাহিদাও বেশি। বিদেশি পোশাকের পাশাপাশি দেশি পোশাকের চাহিদাও কম নয়। আমরা দেশি-বিদেশি দুই ধরনের পোশাকই বিক্রি করছি। বিদেশি পোশাকের মধ্যে পাকিস্তানি ও কাশ্মিরি কিছু নতুন ডিজাইনের পোশাক ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে।’
এদিকে, শহরের ফুটপাতের দোকানগুলোতেও পুরোদমে শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা। বঙ্গবাজার মার্কেট, কেসি কলেজের পাশের মার্কেট, ম্যাটিনিটির পাশের মার্কেট, জিন্নাহ মার্কেটসহ সবকটি মার্কেটেই এখন উপচেপড়া ভিড়। এসব মার্কেটে নিম্ন-মধ্যবিত্ত লোকজন তাদের পছন্দমতো কেনাকাটা করছেন।
হেলাল উদ্দিন নামে এক ক্রেতা সাংবাদিককে জানান, ছেলের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন। তিনি জানান, মার্কে গুলোতে চাঁদাবাজ আর বখাটের উৎপাত না থাকায় গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা।
আদর্শপাড়ার সুরাইয়া বেগম বলেন, ‘পরিবারের সকলের জন্য ঈদের বাজার করতে এসেছি। তবে দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। অল্প বাজেটের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা করতে হবে। তবে দেশি অনেক ভালো মানের কাপড় রয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান সাংবাদিককে জানান, ঝিনাইদহে ঈদের আনন্দ নির্বিঘœ করতে পুলিশি টহল জোরদার করাসহ শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।