ফুল নিয়ে মান্নার কেবিনে ওবায়দুল কাদের

বিডিমেট্রোনিউজ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ৩০২ নম্বর কেবিনে ফুল নিয়ে যান কাদের। প্রায় আধঘণ্টা কেবিনে থেকে মান্নার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন তিনি; স্মৃতিচারণ করেন পুরনো দিনের। এসময় বিএসএমএমইউওয়ের উপাচার্য কামরুল হাসানকে ফোন করে সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান কাদের।

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসময় বলেন, “দীর্ঘদিন আমরা একসঙ্গে রাজনীতি করেছি। রাজনীতির বাইরেও একটা সম্পর্ক থাকে। গতকালই আসতে চেয়েছি, নির্বাচনের কারনে পারিনি। আজকে প্রোগ্রাম ছিল, শেষ করে চলে এসেছি।”

 

এক সময়কার জাসদ ছাত্রলীগের তুখোর নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে পর পর দুবার মুজিববাদী ছাত্রলীগের নেতা ওবায়দুল কাদেরকে পরাজিত করে ভিপি হয়েছিলেন।

 

বামধারার এই ছাত্রনেতা নব্বইয়ের দশকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন; পেয়েছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও। সেসময় ওবায়দুল কাদের ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

 

ওয়ান-ইলেভেন নামে পরিচিত ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর আওয়ামী লীগে সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান মান্না। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের পদ হারালে তিনি নাগরিক ঐক্য নামে নতুন দল গঠন করেন।

 

দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের টানা অবরোধ-হরতাল ও সহিংসতায় প্রাণহানির মধ্যে সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপের আহ্বান জানান মান্না। সংলাপ না হলে আবারও ‘ওয়ান ইলেভেনের’ কথা বলে আলোচিত হন তিনি।

 

এরপরই বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির সঙ্গে মান্নার টেলিফোন আলাপের দুটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ হয়, যেখানে তার কণ্ঠে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনা হস্তক্ষেপের উদ্যোগে আগ্রহের সুর শোনা যায়।

 

ওই কথোপকথনের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন জোরদারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লাশ ফেলার’ কথাও বলতে শোনা যায় তাকে। এই প্রেক্ষাপটে ওই বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি মান্নাকে আটক করে পুলিশ। সেনা বিদ্রোহে উসকানি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারের ২১ মাস পর গত ১৮ ডিসেম্বর জামিনে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন মান্না। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts