শিউল মনজুর
এখন ফাগুনের বাসন্তি রঙ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। ফুলে ফুলে প্রজাপতি মেলে দিয়েছে ডানা। পাখিদের কলরবে জেগে উঠছে প্রতিদিন মাঠ-ঘাট, বৃক্ষ লতা-পাতা। ঋতুবদলের হাওয়ায় পুরনো পাতাঝরিয়ে গাছপালাও মেলে দিচ্ছে সবুজ রঙের বিরামহীন আনন্দ।
আর প্রকৃতির এই নান্দনিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের মনও প্রকৃতির রঙে রঙিন হয়ে উঠছে। সবার হৃদয়ে এক ধরণের ভালোলাগার অনুভুতি প্রবাহমান।
অথচ পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে আমেরিকা-কানাডায় এখনও বসন্তের ছোঁয়া লাগেনি। প্রকৃতিতে শীতের হাওয়া বহে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে ঝিকিমিকি রোদ দেখা দিলেও হাড়কাঁপানো বাতাস জানান দেয়, শীতের তীব্রতা বিন্দুমাত্র কমেনি। কোন কোন জায়গায় তুষার ঝড় বহে যাবার খবরও শোনা যাচ্ছে।
মধ্য ফেব্রুয়ারিতে আমি যখন আমেরিকার মাটিতে পা রাখি, তখন ওয়াশিংটন ডালাস এয়ারপোর্টে যাবতীয় কাজ শেষ করে বাইরে এসে শীতের হাড়কাঁপানো বাতাসের মুখোমুখি হবার নতুন অভিজ্ঞতা হয়। তখনই মনে হয়েছে আমি ও আমার পরিবার পৃথিবীর একপ্রান্ত পেরিয়ে আরেক প্রান্তে চলে এসেছি। তারপর পার্কিং প্লেসে ছুটতে ছুটতে গিয়ে গাড়িতে দ্রুত উঠে আত্মরক্ষা করি।
আজ যখন আমেরিকায় বসবাসকারী সিলভার স্প্রিং সিটির সাইফুল আলমকে বসন্ত কবে আসবে জিজ্ঞেস করি, সে তখন জানালো, আরো মাসখানেক অপেক্ষা করতে হবে। অর্থ্যাৎ এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে এ অঞ্চলে বসন্তের রঙ ছড়াবে প্রকৃতি। বাংলাদেশের পলাশ শিমুলের মতো চেরীফুলের সৌরভে জেগে উঠবে আমেরকিার প্রকৃতি।
নতুন আনন্দে জেগে উঠবে আমেরিকাবাসী।
শিউল মনজুর : কবি ও কথাসাহিত্যিক।